মংলা বন্দরে সেই গম আবার খালাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। খাদ্য বিভাগের ফ্রান্স থেকে আমদানি করা শত কোটি টাকার অধিক মূল্যের ৫২ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন খাবাব অনুপযোগী পোকা ধরা নিম্নমানের গম খালাসের সুযোগের অপেক্ষায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ উপকূলে অবস্থান করেছে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি পিনটেল। সারা দেশে ‘ব্রাজিলের পচা গম’ নিয়ে হৈ-চৈ এর মধ্যে তখন ফ্রান্স থেকে খাদ্য বিভাগের জন্য আনা খাবাব অনুপযোগী পোকা ধরা নিম্নমানের এই গম খালাসে আদালতের নিশেধাজ্ঞা থাকায় আমদানিকারক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড তা চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস করতে না পেরে জাহাজটিকে কৌশলে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে যায়।
ঢাকার এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটিকে খাবার অনুপযোগী পোকা ধরা নিম্নমানের এই গম খালাসের জন্য থাকতে হয় সময় ও সুযোগের অপেক্ষায়। তাদের হাতে মোক্ষম সুযোগটি এসে যায় সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। ওই সময়ে ঢাকা-রংপুরে ইতালী ও জাপানের দুই নাগরিক সন্ত্রাসীদের গুলীতে খুন হলে দেশ-বিদেশে শুরু হয় তোলপাড়। কর্মরত বিদেশীরা বাংলাদেশ ছাড়তে শুরু করে। এই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত গম পরীক্ষায় কর্মরত একজন বিদেশী বিশেষজ্ঞ নিরাপত্তাহীনতায় এদেশ ছেড়ে চলে যান। এই সুযোগে আমদানিকারক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড খাদ্য বিভাগ ও চট্টগ্রামের আমদানিকৃত গম খালাস তদারকি কমিটিকে দ্রুত ম্যানেজ করে তাদের পক্ষে পরীক্ষা রিপোর্ট এনে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩১ হাজার ৫০ মেট্রিক টন গম খালাস করে।
এর পরই বাধে বিপত্তি। আমদানিকৃত চাল-গমের ৪০ ভাগ মংলা বন্দরে খালাস করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশ থাকায় এরপর এই খাবাব অনুপযোগী পোকা ধরা নিম্নমানের অবশিষ্ট ২১ হাজার মেট্রিক টন গম খালাসের জাহাজটিকে ১২ অক্টোবর নিয়ে আসা হয় মংলা বন্দরে। এই বন্দরে আমদানিকৃত গম খালাশ তদারক কমিটি ১৩ অক্টোবর জাহাজে গিয়ে আমদানিকৃত গম পোকায় খাওয়া, পোকাধরাসহ খাবার অনুপোযোগী ও নিম্নমানের দেখতে পায়। নিয়ে আসে পোকায় খাওয়া, পোকা ধরা গমের নমুনা। তদারকি কমিটি ৪৪ কোটি টাকা মূল্যের এই গম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে বিপাকে পড়ে যায় গম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড। তারা খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়ে প্রথমে মংলা বন্দর আমদানিকৃত গম খালাশ তদারকি কমিটির সদস্যদের ম্যানেজের চেষ্ট চালায়। আমদানিকৃত গম খালাশ তদারকী কমিটির সদস্যদের বলা হয় চট্টগ্রামে এই গমের পরীক্ষায় রিপোর্ট ভালো এসেছে, সাড়ে একত্রিশ হাজার মেট্রিক টন গম সেখানে খালাসও হয়েছে। তোমাদের এই গম গ্রহণ করতে তো আপত্তি থাকার কথা নয়। এই গম পুনঃপরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠাও। এভাবেই মংলা বন্দর থেকে গম খালাসের চেষ্টা চালাতে থাকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড। এই গম নিয়ে সংবাদপত্রে রিপোর্ট বেরোবার পর এখনও ওই গম খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দ্রুত মংলা বন্দর দিয়ে খালাসের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আমদানিকৃত গম খালাস তদারকি কমিটির আহ্বায়ক খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী নূরুল ইসলাম সোমবার জানান, নিম্নমানের এই গমবাহী জাহাজ এমভি পিনটেল বর্তমানে মংলা বন্দরের অদূরে পশুর নদীর হাড়বাড়িয়ায় অবস্থান করছে। এই জাহাজের খাবার অনুপোযোগী গম কোন অবস্থাতেই গ্রহণ করা হবে না। এই গম মানব দেহের জন্য উপযোগী নয়। তবে এই গম পশু বা মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। জাহাজে থাকা এই গমের মূল্য প্রায় ৪৪ কোটি।
মংলা বন্দর আমদানি গম খালাস তদারকি কমিটির অন্যতম সদস্য ও সিএসডি গোডাউন ম্যানেজার মো. আব্দুল মান্নান তালুকদার জানান, গম ফের পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়েছে। জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট লিডমন্ড শিপিং এর পরিচালকরাও এই খাবার অনুপোযোগী গম আমদানিকারকদের অংশীদার। তারাও এর সাথে জড়িত। তিনি জানান, জাহাজে থাকা ওই গম পোকায় খাওয়া ও পোকা ধরেছে।
এমভি পিনটেল জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট লিডমন্ড শিপিংয়ের পরিচালক আক্তার হোসেন জানান, এতদিন আদালতের নির্দেশ থাকায় আমরা গম খালাস করতে পারিনি। ৬ মাস ধরে গম জাহাজে থাকায় গমে পোকা ধরা বিচিত্র কিছু না। তিনি স্বীকার করেন মংলায় খালাসের অপেক্ষায় থাকা গমের মধ্যে ২/৩ টন গমে পোকা ধরেছে। এ গমে ডাস্ট একটু বেশি, তবে খাবার উপযোগী। ঢাকা থেকে গমের এ নমুনা পরীক্ষায় তার দেয়া তথ্যের সত্যতা মিলবে বলেও তিনি দাবি করেন। এই জাহাজটিতে ১৯ জন ক্রুর মধ্যে বেশির ভাগই জর্জিয়ার নাগরিক বলে জানান।
শেখ আবু সাঈদ, বাগেরহাট : daily sangram
ঢাকার এই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটিকে খাবার অনুপযোগী পোকা ধরা নিম্নমানের এই গম খালাসের জন্য থাকতে হয় সময় ও সুযোগের অপেক্ষায়। তাদের হাতে মোক্ষম সুযোগটি এসে যায় সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। ওই সময়ে ঢাকা-রংপুরে ইতালী ও জাপানের দুই নাগরিক সন্ত্রাসীদের গুলীতে খুন হলে দেশ-বিদেশে শুরু হয় তোলপাড়। কর্মরত বিদেশীরা বাংলাদেশ ছাড়তে শুরু করে। এই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত গম পরীক্ষায় কর্মরত একজন বিদেশী বিশেষজ্ঞ নিরাপত্তাহীনতায় এদেশ ছেড়ে চলে যান। এই সুযোগে আমদানিকারক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড খাদ্য বিভাগ ও চট্টগ্রামের আমদানিকৃত গম খালাস তদারকি কমিটিকে দ্রুত ম্যানেজ করে তাদের পক্ষে পরীক্ষা রিপোর্ট এনে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩১ হাজার ৫০ মেট্রিক টন গম খালাস করে।
এর পরই বাধে বিপত্তি। আমদানিকৃত চাল-গমের ৪০ ভাগ মংলা বন্দরে খালাস করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশ থাকায় এরপর এই খাবাব অনুপযোগী পোকা ধরা নিম্নমানের অবশিষ্ট ২১ হাজার মেট্রিক টন গম খালাসের জাহাজটিকে ১২ অক্টোবর নিয়ে আসা হয় মংলা বন্দরে। এই বন্দরে আমদানিকৃত গম খালাশ তদারক কমিটি ১৩ অক্টোবর জাহাজে গিয়ে আমদানিকৃত গম পোকায় খাওয়া, পোকাধরাসহ খাবার অনুপোযোগী ও নিম্নমানের দেখতে পায়। নিয়ে আসে পোকায় খাওয়া, পোকা ধরা গমের নমুনা। তদারকি কমিটি ৪৪ কোটি টাকা মূল্যের এই গম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে বিপাকে পড়ে যায় গম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড। তারা খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়ে প্রথমে মংলা বন্দর আমদানিকৃত গম খালাশ তদারকি কমিটির সদস্যদের ম্যানেজের চেষ্ট চালায়। আমদানিকৃত গম খালাশ তদারকী কমিটির সদস্যদের বলা হয় চট্টগ্রামে এই গমের পরীক্ষায় রিপোর্ট ভালো এসেছে, সাড়ে একত্রিশ হাজার মেট্রিক টন গম সেখানে খালাসও হয়েছে। তোমাদের এই গম গ্রহণ করতে তো আপত্তি থাকার কথা নয়। এই গম পুনঃপরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠাও। এভাবেই মংলা বন্দর থেকে গম খালাসের চেষ্টা চালাতে থাকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্স কনসালটেন্ট লিমিটেড। এই গম নিয়ে সংবাদপত্রে রিপোর্ট বেরোবার পর এখনও ওই গম খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দ্রুত মংলা বন্দর দিয়ে খালাসের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আমদানিকৃত গম খালাস তদারকি কমিটির আহ্বায়ক খুলনার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী নূরুল ইসলাম সোমবার জানান, নিম্নমানের এই গমবাহী জাহাজ এমভি পিনটেল বর্তমানে মংলা বন্দরের অদূরে পশুর নদীর হাড়বাড়িয়ায় অবস্থান করছে। এই জাহাজের খাবার অনুপোযোগী গম কোন অবস্থাতেই গ্রহণ করা হবে না। এই গম মানব দেহের জন্য উপযোগী নয়। তবে এই গম পশু বা মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। জাহাজে থাকা এই গমের মূল্য প্রায় ৪৪ কোটি।
মংলা বন্দর আমদানি গম খালাস তদারকি কমিটির অন্যতম সদস্য ও সিএসডি গোডাউন ম্যানেজার মো. আব্দুল মান্নান তালুকদার জানান, গম ফের পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়েছে। জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট লিডমন্ড শিপিং এর পরিচালকরাও এই খাবার অনুপোযোগী গম আমদানিকারকদের অংশীদার। তারাও এর সাথে জড়িত। তিনি জানান, জাহাজে থাকা ওই গম পোকায় খাওয়া ও পোকা ধরেছে।
এমভি পিনটেল জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট লিডমন্ড শিপিংয়ের পরিচালক আক্তার হোসেন জানান, এতদিন আদালতের নির্দেশ থাকায় আমরা গম খালাস করতে পারিনি। ৬ মাস ধরে গম জাহাজে থাকায় গমে পোকা ধরা বিচিত্র কিছু না। তিনি স্বীকার করেন মংলায় খালাসের অপেক্ষায় থাকা গমের মধ্যে ২/৩ টন গমে পোকা ধরেছে। এ গমে ডাস্ট একটু বেশি, তবে খাবার উপযোগী। ঢাকা থেকে গমের এ নমুনা পরীক্ষায় তার দেয়া তথ্যের সত্যতা মিলবে বলেও তিনি দাবি করেন। এই জাহাজটিতে ১৯ জন ক্রুর মধ্যে বেশির ভাগই জর্জিয়ার নাগরিক বলে জানান।
শেখ আবু সাঈদ, বাগেরহাট : daily sangram
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন