বাঙালির স্বাধীনতার লড়াই নিপীড়ক সামরিক সরকারের মুখোমুখী দাঁড়াতে পাকিস্তানি জনগণকেও সাহস যুগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির এক মানবাধিকারকর্মী।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ থেকে ‘দক্ষিণ এশীয় শান্তি মিশন‘ শুরুর দ্বিতীয় দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী হিনা জিলানী।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে নিজেকে ‘পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের প্রতিনিধি’ হিসেবে তুলে ধরেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
হিনা বলেন, “১৯৭১ সালের পরিস্থিতি নিয়ে আমার বক্তব্য হলো- সেসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যে অবিচার করেছে তা পাকিস্তানের ন্যায়চিন্তার মানুষরা স্বীকার করেন।
“শুধু তাই নয়, আমি মনে করি সেসময় বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার লড়াই পাকিস্তানে আমার এলাকার মানুষদেরও উপকৃত করেছে। কারণ এটা আমাদেরকে পাকিস্তানের সামরিক নিপীড়ক সরকারের মুখোমুখী দাঁড়াতে সাহস দিয়েছে; পাকিস্তানের জনগণের স্বার্থে কথা বলার জোর দিয়েছে।”
হিনা জিলানী বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, আমরা কেবল স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকারই করছি না, বরং অগ্রগতির জন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দনও জানাই।”
পাকিস্তানের এই মানবাধিকারকর্মী মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জনগণের সব আকাঙ্ক্ষা এখনো সম্পূর্ণরূপে পূরণ না হলেও এটাকে ব্যর্থ বলা যাবে না।
“আমার মনে হয়, এগিয়ে যাওয়ার জন্য আরও কাজ করতে হবে; সেই সক্ষমতা আপনাদের রয়েছে।”
এই মিশনের আয়োজক দক্ষিণ এশিয়ার মানবাধিকারকর্মীদের সংগঠন সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস, যার চেয়ারপারসন হিনা জিলানী।
সম্প্রতি তার বোন মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীরও বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।
তাদের বাবা মালিক গোলাম জিলানী ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে জেনারেল ইয়াহিয়াকে খোলা চিঠি লেখেন তিনি। এজন্য কারাবরণ করতে হয় তাকে।
২০১৩ সালের ২৪ মার্চ মালিক জিলানীর হয়ে ‘বাংলাদেশের বন্ধু সম্মাননা’ সনদ নেন তার মেয়ে আসমা জাহাঙ্গীর, মানবাধিকার আন্দোলনের এই নেত্রী বাংলাদেশেও পরিচিত মুখ।
ওই সময় স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ানো ৬৯ জন বিদেশি বন্ধুকে সম্মাননা দেয়া হয়, তাদের মালিকসহ ১৩ জন ছিলেন পাকিস্তানি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে পাকিস্তানি বাহিনী যে গণহত্যা শুরু করেছিল, বিবেকের তাড়নায় তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এরা।
সম্প্রতি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করাকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হিনা বলেন, “আপনারা যদি এটাকে প্রয়োজনীয় এবং আইনসম্মত বলে মনে করেন, তাহলে আপনাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। অন্যরা আপনাদের কী বলেছে, তাতে চিন্তিত হবেন না।
“আমি পাকিস্তান সংসদের অংশ নই; তাদের পক্ষে জবাবও দিতে পারব না। কিন্তু পাকিস্তানের নাগরিক হিসাবে, দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিউনিটির অংশ হিসাবে আমি মনে করি, ‘ট্রানজিশনাল জাস্টিস’ মানবাধিকারের প্রয়োজনীয় অংশ।
“কিন্তু এর প্রক্রিয়াকেও মানবাধিকারের সব মান রক্ষা করতে হবে। যদি আপনারা আত্মবিশ্বাসী হন যে, সব মান রক্ষা হয়েছে, তাহলে আপনাদের স্বস্তিতেই থাকা উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের বাংলাদেশ ব্যুরো সদস্য সুলতানা কামাল। বাংলাদেশ থেকে শুরুর হওয়া এই মিশন পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে যাবে।
শান্তি স্থাপনে দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের নারীদের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মূলধারায় নিয়ে আসার লক্ষে্যেই এই শান্তি মিশন।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশ থেকে শুরু হওয়া এই মিশন আফগানিস্তান, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় যাবে।
মিশনের অংশ হিসাবে শনিবার থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বসেন মিশনের সদস্যরা।
অন্য দেশেও শান্তি স্থাপনে বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবে মিশনের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আসকের আকলিমা ফেরদৌস লিসা, পাকিস্তানের নাজিস আতা-উল্লাহ ও মালদ্বীপের আমিনাথ জামিল প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে নিজেকে ‘পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের প্রতিনিধি’ হিসেবে তুলে ধরেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।
হিনা বলেন, “১৯৭১ সালের পরিস্থিতি নিয়ে আমার বক্তব্য হলো- সেসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যে অবিচার করেছে তা পাকিস্তানের ন্যায়চিন্তার মানুষরা স্বীকার করেন।
“শুধু তাই নয়, আমি মনে করি সেসময় বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার লড়াই পাকিস্তানে আমার এলাকার মানুষদেরও উপকৃত করেছে। কারণ এটা আমাদেরকে পাকিস্তানের সামরিক নিপীড়ক সরকারের মুখোমুখী দাঁড়াতে সাহস দিয়েছে; পাকিস্তানের জনগণের স্বার্থে কথা বলার জোর দিয়েছে।”
হিনা জিলানী বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, আমরা কেবল স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকারই করছি না, বরং অগ্রগতির জন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দনও জানাই।”
পাকিস্তানের এই মানবাধিকারকর্মী মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জনগণের সব আকাঙ্ক্ষা এখনো সম্পূর্ণরূপে পূরণ না হলেও এটাকে ব্যর্থ বলা যাবে না।
“আমার মনে হয়, এগিয়ে যাওয়ার জন্য আরও কাজ করতে হবে; সেই সক্ষমতা আপনাদের রয়েছে।”
এই মিশনের আয়োজক দক্ষিণ এশিয়ার মানবাধিকারকর্মীদের সংগঠন সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস, যার চেয়ারপারসন হিনা জিলানী।
সম্প্রতি তার বোন মানবাধিকারকর্মী আসমা জাহাঙ্গীরও বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থানের সমালোচনা করেছেন।
তাদের বাবা মালিক গোলাম জিলানী ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে জেনারেল ইয়াহিয়াকে খোলা চিঠি লেখেন তিনি। এজন্য কারাবরণ করতে হয় তাকে।
২০১৩ সালের ২৪ মার্চ মালিক জিলানীর হয়ে ‘বাংলাদেশের বন্ধু সম্মাননা’ সনদ নেন তার মেয়ে আসমা জাহাঙ্গীর, মানবাধিকার আন্দোলনের এই নেত্রী বাংলাদেশেও পরিচিত মুখ।
ওই সময় স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ানো ৬৯ জন বিদেশি বন্ধুকে সম্মাননা দেয়া হয়, তাদের মালিকসহ ১৩ জন ছিলেন পাকিস্তানি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে পাকিস্তানি বাহিনী যে গণহত্যা শুরু করেছিল, বিবেকের তাড়নায় তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এরা।
সম্প্রতি পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করাকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হিনা বলেন, “আপনারা যদি এটাকে প্রয়োজনীয় এবং আইনসম্মত বলে মনে করেন, তাহলে আপনাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। অন্যরা আপনাদের কী বলেছে, তাতে চিন্তিত হবেন না।
“আমি পাকিস্তান সংসদের অংশ নই; তাদের পক্ষে জবাবও দিতে পারব না। কিন্তু পাকিস্তানের নাগরিক হিসাবে, দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিউনিটির অংশ হিসাবে আমি মনে করি, ‘ট্রানজিশনাল জাস্টিস’ মানবাধিকারের প্রয়োজনীয় অংশ।
“কিন্তু এর প্রক্রিয়াকেও মানবাধিকারের সব মান রক্ষা করতে হবে। যদি আপনারা আত্মবিশ্বাসী হন যে, সব মান রক্ষা হয়েছে, তাহলে আপনাদের স্বস্তিতেই থাকা উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের বাংলাদেশ ব্যুরো সদস্য সুলতানা কামাল। বাংলাদেশ থেকে শুরুর হওয়া এই মিশন পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে যাবে।
শান্তি স্থাপনে দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের নারীদের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মূলধারায় নিয়ে আসার লক্ষে্যেই এই শান্তি মিশন।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশ থেকে শুরু হওয়া এই মিশন আফগানিস্তান, ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় যাবে।
মিশনের অংশ হিসাবে শনিবার থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বসেন মিশনের সদস্যরা।
অন্য দেশেও শান্তি স্থাপনে বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবে মিশনের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আসকের আকলিমা ফেরদৌস লিসা, পাকিস্তানের নাজিস আতা-উল্লাহ ও মালদ্বীপের আমিনাথ জামিল প্রমুখ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন