সাঙ্গ হলো ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব’। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত শিকড়ের গানের মোহ পুরো শহরে ছড়িয়ে আসরটি এবারের মতো শেষ হলো। তিন দিনের এ উৎসবে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পীরা। এ আয়োজনে গানের ফাঁকে কয়েকজন খ্যাতিমান শিল্পী কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে। তাঁদের কথা নিয়েই এ আয়োজন। শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রণব ভৌমিক ও আদর রহমান
পরিবারে একটা গানের চল ছিল। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দ্বিজেন্দ্র, রজনীকান্ত, অতুল প্রসাদ শুনে শুনে পার্বতী বাউল বড় হয়েছেন। তখন থেকেই শিখেছেন শাস্ত্রীয় সংগীত ও কত্থক নাচ। কিন্তু এসব কোনো কিছুই পার্বতীকে শেষ পর্যন্ত টানল না।
পার্বতী বলেন, ‘আমরা যখন আসামে ছিলাম, তখন সেখানকার ভাওয়াইয়া, বিহু, গোয়ালপাড়িয়ার গান আমাকে আকর্ষণ করত।’
শাস্ত্রীয় সংগীত ভালোই লাগত পার্বতীর। কিন্তু জীবনের সত্যিকারের ছবি তিনি সেখানে পেতেন না। ‘সংগীত তো ভেতরে গিয়ে আঘাত করে, সেটা শাস্ত্রীয় সংগীত থেকে পেতাম না। আমার মাটির গানই ভালো লাগত।’ বলছিলেন পার্বতী বাউল।
পরে পার্বতী বাউল শান্তিনিকেতনে চিত্রকলা বিষয়ে পড়াশোনা করতে যান। সেখানে বাউলদের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। পার্বতী বলেন, ‘এরপর আমার আর কিছু দরকার হয়নি। বাউলগানের টানের মধ্যে একটা অদ্ভুত উদাত্ততা আছে, একটা উন্মুক্ত ভাব, গলাটা যেন আকাশ ছুঁতে যায়। আমি তার প্রেমে পড়ে গেলাম।’
পার্বতীর জন্ম পশ্চিমবঙ্গে হলেও তাঁর পূর্বপুরুষের আদি বাড়ি চট্টগ্রামে, রাউজানের পশ্চিম গুজরার গ্রামের পারিয়ালপাড়ায়। সেখানে তাঁর দাদুর একটি যাত্রার দল ছিল। ঠাকুমার কাছ থেকে চট্টগ্রামের অনেক গল্প শুনতেন পার্বতী। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি যান সেই ভিটেবাড়িতে। পার্বতী বলেন, ‘সেখানে যাওয়ার পর দেখি, গ্রামের অনেকে আমার দাদুকে চেনেন। পুরো গ্রাম আমাকে আপন করে নিয়েছিল, অথচ তাঁরা কেউ আমাকে কখনো দেখেননি। বাংলাদেশের ব্যাপারে এই আন্তরিকতার কথা আমি সব সময় মন থেকে বলি। আর আছে ভাষার আন্তরিকতা, এখানে কথা বলে আমি অনেক শান্তি পাই।’
আজকের দিনে বাউলগানের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে পার্বতী বলেন, বাউলগান আত্মচেতনার কথা বলে। মনের গণ্ডিকে পেরিয়ে যাওয়াই বাউলের কাজ। সবাই মুক্তির সেই জায়গায় পৌঁছাতে না পারে, কিন্তু তার আস্বাদ তো পেতে পারে। যে একবার ভালোবাসার স্বাদ পেয়েছে, তখন ঘৃণাকে সে আর জায়গা দেবে না। পার্বতী বাউল বলেন, ‘যেখানে আজ পৃথিবীজুড়ে অস্থিরতা—মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটা কেবল বিনিময়ের, সেখানে বাউলতত্ত্ব অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। তা না হলে আমাদের তো আর যাওয়ার জায়গা নেই। আমরা যে মানুষ, সেটাই তো ভুলে যাব!’ prothomalo
পরিবারে একটা গানের চল ছিল। ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দ্বিজেন্দ্র, রজনীকান্ত, অতুল প্রসাদ শুনে শুনে পার্বতী বাউল বড় হয়েছেন। তখন থেকেই শিখেছেন শাস্ত্রীয় সংগীত ও কত্থক নাচ। কিন্তু এসব কোনো কিছুই পার্বতীকে শেষ পর্যন্ত টানল না।
পার্বতী বলেন, ‘আমরা যখন আসামে ছিলাম, তখন সেখানকার ভাওয়াইয়া, বিহু, গোয়ালপাড়িয়ার গান আমাকে আকর্ষণ করত।’
শাস্ত্রীয় সংগীত ভালোই লাগত পার্বতীর। কিন্তু জীবনের সত্যিকারের ছবি তিনি সেখানে পেতেন না। ‘সংগীত তো ভেতরে গিয়ে আঘাত করে, সেটা শাস্ত্রীয় সংগীত থেকে পেতাম না। আমার মাটির গানই ভালো লাগত।’ বলছিলেন পার্বতী বাউল।
পরে পার্বতী বাউল শান্তিনিকেতনে চিত্রকলা বিষয়ে পড়াশোনা করতে যান। সেখানে বাউলদের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। পার্বতী বলেন, ‘এরপর আমার আর কিছু দরকার হয়নি। বাউলগানের টানের মধ্যে একটা অদ্ভুত উদাত্ততা আছে, একটা উন্মুক্ত ভাব, গলাটা যেন আকাশ ছুঁতে যায়। আমি তার প্রেমে পড়ে গেলাম।’
পার্বতীর জন্ম পশ্চিমবঙ্গে হলেও তাঁর পূর্বপুরুষের আদি বাড়ি চট্টগ্রামে, রাউজানের পশ্চিম গুজরার গ্রামের পারিয়ালপাড়ায়। সেখানে তাঁর দাদুর একটি যাত্রার দল ছিল। ঠাকুমার কাছ থেকে চট্টগ্রামের অনেক গল্প শুনতেন পার্বতী। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি যান সেই ভিটেবাড়িতে। পার্বতী বলেন, ‘সেখানে যাওয়ার পর দেখি, গ্রামের অনেকে আমার দাদুকে চেনেন। পুরো গ্রাম আমাকে আপন করে নিয়েছিল, অথচ তাঁরা কেউ আমাকে কখনো দেখেননি। বাংলাদেশের ব্যাপারে এই আন্তরিকতার কথা আমি সব সময় মন থেকে বলি। আর আছে ভাষার আন্তরিকতা, এখানে কথা বলে আমি অনেক শান্তি পাই।’
আজকের দিনে বাউলগানের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে পার্বতী বলেন, বাউলগান আত্মচেতনার কথা বলে। মনের গণ্ডিকে পেরিয়ে যাওয়াই বাউলের কাজ। সবাই মুক্তির সেই জায়গায় পৌঁছাতে না পারে, কিন্তু তার আস্বাদ তো পেতে পারে। যে একবার ভালোবাসার স্বাদ পেয়েছে, তখন ঘৃণাকে সে আর জায়গা দেবে না। পার্বতী বাউল বলেন, ‘যেখানে আজ পৃথিবীজুড়ে অস্থিরতা—মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কটা কেবল বিনিময়ের, সেখানে বাউলতত্ত্ব অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। তা না হলে আমাদের তো আর যাওয়ার জায়গা নেই। আমরা যে মানুষ, সেটাই তো ভুলে যাব!’ prothomalo
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন