রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫

প্যারিস: রোমান্টিক সিটি থেকে আতংকের নগরী

 
                               
শুক্রবারের দুঃস্বপ্নের রাতের পর শনিবার সকাল। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সন্ত্রাসী হামলার জায়গাগুলোতে রক্তের দাগ এখনো স্পষ্ট। নিহতদের স্মরণে ফুলের তোড়া রেখে গেছে অনেকে। ভয় আর আতংকে প্যারিস এখন জড়োসড়ো।
গত জানুয়ারীতে শার্লি এবডো কার্টুন ম্যাগাজিনে হামলার পর প্রশ্ন উঠেছিল- প্যারিস এখন কতটা নিরাপদ। তবে এই প্রশ্ন সত্ত্বেও প্যারিস নিয়ে কিন্তু মানুষ আতংকে ভোগেনি।
সেবারের হামলার লক্ষ্য ছিল কার্টুনিষ্টরা, ইহুদীরা। সাধারণ মানুষ তখন এই ভেবে নিজেদের নিরাপদ মনে করেছে যে হামলাকারীরা যাকে-তাকে টার্গেট করছে না, সুতরাং তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
কিন্তু শুক্রবারের রাতে ঘটনা সব বদলে দিয়েছে।
বাগদাদ কিংবা বৈরুতের রাস্তায় যে হামলা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার, সেই হামলা প্রত্যক্ষ করেছে প্যারিস।
আর সে কারণেই এবার যেন ভয় আর আতংক গ্রাস করেছে এই নগরীকে।
“শনিবার সকাল থেকে প্যারিস থমথমে। রাস্তাঘাটে লোক নেই। শনিবার সকালে যে বাজার বসে, সেই বাজার বসেনি”, বলছেন প্যারিসের বাসিন্দা আনা ইসলাম।
সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছিল আজ স্কুল-কলেজ সব বন্ধ থাকবে। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকটি প্যারিসের সবচেয়ে বড় ল্যান্ডমার্ক ‘আইফেল টাওয়ারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এই আতংক কাটিয়ে উঠে প্যারিস কি আবার তার স্বাভাবিক উচ্ছলতা ফিরে পাবে?
সন্দিহান অনেকেই। গত জানুয়ারিতে শার্লি এবডোর হামলার পর থেকে প্যারিসের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী। শুক্রবারের হামলার পর প্যারিসের রাস্তায় রাস্তায় তাদের উপস্থিতি এখন আরও বেড়েছে।
মা এখন তার টিনএজার ছেলেকে বাইরে যেতে দিতে উদ্বিগ্ন। স্ত্রী ঘরে ফিরতে দেরি হলে স্বামী টেনশনে।
                           
এভাবে প্রতিটি মানুষের নিত্যদিনের আচরণ যেন পাল্টে দিচ্ছে এই ভয় আর আতংক।
এর আগে শার্লি এবডোতে হামলার পর দশ লক্ষ মানুষ প্যারিসের রাস্তায় মিছিল করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে, শার্লি এবডোর কার্টুনিষ্টদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে।
কিন্তু এখন প্রতিটি মানুষই যখন হামলার সম্ভাব্য টার্গেট, তখন কে কার সঙ্গে সংহতি জানাবে ? bbc

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন