ব্রাজিলে সিজারিয়ান বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের হার বিশ্বে সবচাইতে বেশি।
দেশটির বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নেয়া মোট শিশুর ৮৫ শতাংশের জন্ম হয় সিজারিয়ানের মাধ্যমে।আর সরকারি হাসপাতালে তার হার ৪৫ শতাংশ।
মায়েদের না বোঝার বিষয়টিকে ব্রাজিলে সিজারিয়ানের উচ্চহারের একটি কারণ বলা হয়।
তবে মুল কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে দেশটিতে ডাক্তারদের চাপের কারণেই মায়েরা প্রাকৃতিক ভাবে সন্তান জন্মদানের চেয়ে সি-সেকশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।
আর ডাক্তারদের সি-সেকশনে বেশি আগ্রহের কারণ হলও এতে তারা বাড়তি অর্থ পান।
অন্যদিকে যোনিপথ দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে প্রসব বেদনা ওঠার পর সন্তান প্রসবে সময় চলে যায় অনেক বেশি।
কিন্তু তাতে পয়সা কম। তাই ডাক্তারদের সি-সেকশনেই আগ্রহ বেশি।
সিজারিয়ানের মাধ্যমে তিন সন্তানের জন্মের পর মনিকা ডি কাম্পোস অন্তত একবার প্রাকৃতিক নিয়মে সন্তান জন্মদানের সিদ্ধান্ত নিলেন।
তিনি বলছিলেন, “আমার যখন প্রথম সন্তান হলও তখন আমার বয়স ১৫। সত্যি বলতে কি ডাক্তার যখন বললো জরুরী ভিত্তিতে আমাকে সিজারিয়ান করাতে হবে আমি তখন বিষয়টার কিছুই বুঝতাম না”
এভাবে তিনবার সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিলেন মনিকা।
তিনি বলছেন, শুরুতে তিনি ভেবেছিলাম এটাই বোধহয় নিয়ম।
প্রতিবার ডাক্তার তাকে নানা ধরনের সমস্যার কথা বলতো।
হাসপাতালে প্রাকৃতিক নিয়মে সন্তান জন্ম দিতে আসা নারীদের প্রসব বেদনার সময় চিৎকারে ডাক্তার ও নার্সদের অশোভন আচরণের কথাও উল্লেখ করছিলেন তিনি।
“একবার এক মহিলাকে নার্স ও ইন্টার্র্নি ডাক্তাররা বলছিল, বাচ্চা যখন পয়দা করছিলে তখনতো এতো চেঁচাওনি”
তৃতীয় সন্তানের জন্মদানের সময় তিনি প্রাকৃতিক নিয়মে জন্মদানের বিষয়টি নিয়ে নিজেই বেশ গবেষণা করলেন।
কিন্তু ডাক্তারদের বক্তব্য ছিল দুবার সিজারিয়ানের পর সেটা আর সম্ভব নয়।
অগত্যা তৃতীয়বারও অস্ত্রোপচার।
কিন্তু তারপরও হাল ছেড়ে দেয়ার মানুষ নন মনিকা।
চতুর্থ বার আবার গর্ভবতী হবেন সেটা অবশ্য ভাবেন নি।
কিন্তু যখন আবার গর্ভবতী হলেন তখন তিনি প্রাকৃতিক পন্থায় জন্মদানের ব্যাপারে ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেন।
সেজন্য লোকজনের কাছ থেকে তিরস্কারের শিকারও হয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু অবশেষে পেয়ে গেলেন বয়সে তরুণ এক ডাক্তার যিনি তার সহায়তায় এগিয়ে এলেন।
“প্রসব বেদনা ওঠার পর একেবারে শেষমুহুর্তে হাসপাতালে গেলাম। ওরকম ব্যথা নিয়েও আমি চেষ্টা করছিলাম কোন শব্দ না করার। চুপটি করে বসে ছিলাম। বেশ কষ্ট করে সয়ে গিয়েছিলাম প্রসব বেদনা। কারণ যাতে আমাকে সহায়তা করতে গিয়ে আমার ডাক্তার কোন বিপদে না পড়ে”
মনিকা বলছিলেন, খুব বেশি কষ্ট অবশ্য তাকে করতে হয়নি।
“সামান্য একটু চেষ্টাতেই আমার চতুর্থ সন্তান হোসে ভিটর জন্ম নিলো। আমার মনে হয়েছিলো তার জন্মের মাধ্যমে আমারও নতুন করে জন্ম হলও”
bbc bangla
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন