১৯ রান, আর মাত্র ১৯ রান! দুবাই টেস্টের আগে সবার মনেই বোধ হয় এই এক ছন্দ ঘুরেফিরে আসছিল। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের রেকর্ড নিজের করে নিতে ইউনিস খানের মাত্র ১৯ রানই দরকার ছিল। ইউনিসের রেকর্ড নিয়ে মাথা ঘামাতে গিয়ে সবাই যেন ভুলেই গিয়েছিল শোয়েব মালিকের কথা।
মালিক আজ পাঁচ বছর পরে টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন। আর টেস্টে প্রত্যাবর্তনের ইনিংসেই পেয়েছেন সেঞ্চুরি। এই অলরাউন্ডারের ১২৪ রানের ওপর ভর করে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রানে দিন শেষ করেছে পাকিস্তান। সেঞ্চুরির তালিকায় থাকতে পারতেন মোহাম্মদ হাফিজও। কিন্তু ২ রানের হতাশা নিয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
দিনটি হওয়ার কথা ছিল কেবল ইউনিস খানের। কিন্তু দিনটি নিজের করে নিয়েছেন মালিক। দিনের শুরুতেই শান মাসুদকে হারিয়ে বসে পাকিস্তান দল। মাত্র ৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান দল। তখনই উইকেটে আসেন মালিক। দিনের সপ্তম ওভারে উইকেটে নেমে মরুর উত্তাপ মাথায় নিয়ে সারা দিন ৮০ ওভার ব্যাটিং করে অপরাজিত থেকে ফিরেছেন।
১২ রানের মাথায় ইয়ান বেল হাফিজের ক্যাচ ফেলে না দিলে বিপদ পড়তে পারত পাকিস্তান। নতুন করে পাওয়া জীবনকে কাজে লাগিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন হাফিজ। ৯৩ রানের জুটি গড়ার পর আবার ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ব্যক্তিগত ৪০ রানের মাথায় স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে গালিতে ক্যাচ দেন মালিক। কিন্তু এবারও ভাগ্যের সহায়তা পায় পাকিস্তান। ‘নো বল’ হওয়ার কারণে নতুন করে জীবন পান মালিক।
দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৮ রানের জুটি গড়ার পর বেন স্টোকসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান হাফিজ। ক্যারিয়ারের নবম শতক থেকে তখন মাত্র দুই রান দূরে ছিলেন। তখনই উইকেটে আসেন ইউনিস খান। ইউনিস খান হতাশ করেননি। ১৯ রানের দরকার ছিল, তিনি নিয়েছেন তার দ্বিগুণ। দলীয় ২৪৭ রানের মাথায় ব্রডের বলে দিনের তৃতীয় উইকেট হয়ে ফেরেন ইউনিস। খানিক পরেই ফিরে যান পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল হকও।
৪ রানের মাঝে দুই উইকেট হারিয়ে হালকা চাপের মুখে পড়ে যায় পাকিস্তান। কিন্তু আসাদ শফিককে সঙ্গী করে বাকি দিনটি নিরাপদেই পার করেছেন মালিক। ইংল্যান্ডের হয়ে ২৯ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন। আর এই ২ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটের মালিকের তালিকার সেরা দশ থেকে বের করে দিলেন ওয়াসিম আকরামকে।
ছয় বছর পর টেস্টে তিন অঙ্কের দেখা পেলেন মালিক। সর্বশেষ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে শতরান পেয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। বিশ্বকাপের পর দলে ফেরা মালিক নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে আছেন। এই সময়ে এখন পর্যন্ত টেস্ট ও ওয়ানডেতে দুইটি শতক এবং তিনটি অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন। ফিরে আসার পর সব ধরনের ক্রিকেটে ১৮ ইনিংসে ৭৪.২০ গড়ে ৭৪২ রান করেছেন। জমিয়ে রাখা সব রানই যেন সুদসহ উশুল করছেন মালিক! |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন