শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫

বাংলাদেশের কাঁচা পাট চাইছে ভারতের চটকলগুলো

 
    bangladesh_raw_jute                           
কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।
ভারতে এবার কাঁচাপাটের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০% কম হয়েছে। তাই এবছর ভারতের চটকলগুলি চালু রাখার জন্যই বাংলাদেশের কাঁচা পাট প্রয়োজন বলে সরকারীভাবে জানানো হচ্ছে।
ভারতের পাট ব্যবসায়ীদেরও এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতি হতে চলেছে।
অন্যদিকে কাঁচামালের যোগান কম থাকা স্বত্ত্বেও যাতে চটকলগুলি পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত চালু রাখা যায়, তার জন্য উৎপাদন কম করা, কাঁচামাল মজুত রাখার নতুন সীমানির্ধারন সহ বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত সরকার।
বলা হচ্ছে, এইসব ব্যবস্থা না নিলে মার্চের পরে হয়তো অনেক চটকলই বন্ধ হয়ে যাবে সাময়িকভাবে।
ভারতের জুট কমিশনার সুব্রত গুপ্ত বিবিসি-কে বলছিলেন, “কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক ঢাকায় আমাদের দূতাবাসকে জানিয়েছে যাতে তারা বাংলাদেশকে কাঁচাপাট রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অনুরোধ করে।
বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা ভারতের চটশিল্পের ওপরে একটা বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাজারিয়া।
bangladesh_raw_jute                           
মি. কাজারিয়ার কথায়, “এটা দেশের পাটশিল্পের ওপরে একটা বড় ধাক্কা। এবছর দুই দেশেই ফসল মার খেয়েছে, কাঁচাপাটের উৎপাদন কম হয়েছে। সেজন্যই বাংলাদেশকে রপ্তানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হয়েছে যাতে তাদের দেশের চটকলগুলি চালু রাখা যায়।
তিনি অবশ্য বলেন, যদিও ভারত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অনুরোধ করেছে, সেটা কতটা মানবে বাংলাদেশ - তাতে সন্দেহ রয়েছে।
আর এক শিল্পপতি ঘণশ্যাম সারদা অবশ্য মনে করেন, “বাংলাদেশ যেমন নিজেদের শিল্পকে বাঁচানোর জন্য কাঁচাপাট রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, শুধু তৈরী বস্তাই তারা রপ্তানী করতে চায়, তেমনি ভারতেরও উচিত বাংলাদেশ থেকে চটের বস্তা আমদানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা।"
"অন্তত এরকম ব্যবস্থা তো করা যেতেই পারে, যে পরিমান কাঁচাপাট তারা দেবে, সেই পরিমান চটের বস্তা ভারতে ঢুকতে দেওয়া হবে।“ বলেন তিনি।
ফসল মার খাওয়ার বছরেও যাতে চটকলগুলি পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত খোলা রাখা যায়, তার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানানোর সঙ্গেই আরও কতগুলি ব্যবস্থা নিয়েছে।
ভারতে মোট ৮৪টি চটকল রয়েছে – যার মধ্যে ৬৪টি-ই পশ্চিমবঙ্গে। এই শিল্পের সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ শ্রমিক সরাসরি যুক্ত আর পাট চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ।
সারাদেশে পাটশিল্পের প্রধান ক্রেতা ভারত সরকার – মূলত খাদ্য সরবরাহের জন্যই চটের বস্তা কিনে নেয় তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গোটা শিল্পে কাঁচামালের যোগান হঠাৎ কমে গেলে তার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন