ভারতের মধ্যপ্রদেশে গতকালের যে বিস্ফোরণে ৯০জনেরও বেশি মারা গেছেন, এখন জানা যাচ্ছে সেটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে নয় – বরং জিলাটিন স্টিকে আগুন লেগেই ঘটেছিল।
ঝাবুয়াতে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে খনির কাজে ব্যবহৃত ওই জিলাটিন মজুত করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
হতাহতদের দেখতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন আজ ঘটনাস্থলে যান, তখন তাকে ঘিরেও মানুষ প্রবল বিক্ষোভ দেখায়।
ঝাবুয়াতে যে প্রচন্ড বিস্ফোরণে প্রায় একশোর কাছাকাছি লোক মারা গেছেন ও আরও শতাধিক মানুষ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন – প্রথমে ভাবা হয়েছিল স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁর গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই ওই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত।
কিন্তু আজ (রোববার) ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে রাজেন্দ্র কাসওয়া নামে এক ব্যবসায়ীর গুদামে রাখা জিলাটিন স্টিক থেকেই এত বিধ্বংসী বিস্ফোরণ হয়েছে।
ঝাবুয়া এলাকাটি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, মি কাসওয়াও খনির ব্যবসাই করেন এবং তার জিলাটিন রাখার লাইসেন্সও আছে। কিন্তু শহরের যে ঘিঞ্জি এলাকায় তিনি সেগুলো মজুত করেছিলেন তা ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি।
ঝাবুয়াতে এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে, এমন কী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংয়ের গাড়িবহর ঘিরে ধরেও তারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
বিক্ষোভের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মি চৌহান গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে তিনি ঘোষণা করেন এতগুলো নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রতিকারে সরকার সব রকম চেষ্টা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি যাতে সাধারণ সরকারি কর্মকর্তারা নন, হাইকোর্টের একজন বিচারপতি দোষীদের চিহ্নিত করতে পারেন। তবে সেই তদন্ত যতিদন না-শেষ হচ্ছে, ততদিনও আমরা চুপ করে বসে থাকব না, অপরাধীদের ধরার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতা চলবে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য যা যা করা দরকার সব করা হবে।’
জনতার দাবির মুখে মুখ্যমন্ত্রী চৌহান আরও ঘোষণা করেন, নিহতদের পরিবার ২ লক্ষ রুপির পরিবর্তে এখন ১০ লক্ষ রুপি করে ক্ষতিপূরণ পাবে।
কিন্তু মূল অভিযুক্ত রাজেন্দ্র কাসওয়া ঘটনার পর থেকেই সপরিবারে পলাতক, পুলিশ এখনও তার সন্ধান পায়নি।
তার প্রতিবেশীরা বলছেন, মি কাসওয়া যে জনপদের মধ্যেই জিলাটিন মজুত করছেন তারা বছরখানেক আগেই সে অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি।
bbc
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন