বাংলাদেশে হিজড়াদের ভোটাধিকার দেবার পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
কিন্তু প্রথমবারের মত এই দুজন হিজড়া আসন্ন পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।সুমি খাতুন এবং দিথি বেগম দু’জনেই অবশ্য লড়ছেন সংরক্ষিত নারী আসনে।
সাতক্ষিরার কলারোয়াতে দিথি বেগমের কিছু ব্যবসা আছে। তাছাড়া পৈতৃকসূত্রে তার কিছু জমিও রয়েছে। এলাকার মানুষের কাছে তার পরিচিতি রয়েছে।
কতটা গ্রহণযোগ্য হবেন- বিবিসি বাংলার এই প্রশ্নে তিনি বলেন সেটি প্রমাণিত হবে নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে।
দিথি বেগম বলেন, তিনি বিভিন্ন সময় গরীব মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। অনেককে তিনি আর্থিকভাবে সহায়তাও করেছেন। এলাকার মানুষের উপকার করার করার ইচ্ছা থেকেই নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দিতা করছেন বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশের সমাজে যেখানে হিজড়াদের অবজ্ঞার চোখে দেখা হয় সেখানে নির্বাচনী প্রচারণার এলাকার মানুষ তাকে কিভাবে দেখছেন?
দিথি বেগম বলেন, “ মানুষ সহযোগিতা করছে। সবাই আমাকে ভালবাসছে।” তার পেছনে ‘এলাকার মুরব্বিদের’ সমর্থন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দিথি বেগম বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি অনেক প্রার্থীকে নির্বাচনে বিজয়ী হতে সাহায্য করেছেন। “এজন্য এবার ভাবলাম আমি নিজেই নির্বাচন করি। আগে যারা ছিল তাদের অনেকেই স্বজনপ্রীতি করেছে। আমার তো কোন পিছু টান নেই।”
দিথি বেগমের সাথে সেই ওয়ার্ডে আরও দুইজন প্রার্থী প্রতিন্দ্বন্দিতা করছেন। এদের একজন লুৎফুন নেসা। নিজের প্রতিন্দ্বন্দি হিসেবে একজন হিজড়াকে তিনি সহজভাবেই গ্রহণ করছেন।
লুৎফুন নেসা বলেন , “ভোটার হিসেবে তার অধিকার আছে নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দিতা করার। জনগণ যদি চায় তাহলে সে জিতবে। আমার কাছে কোন অস্বস্তিকর লাগছে না।”
বাংলাদেশে হিজড়াদের সংখ্যা কত সেটির সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই। হিজড়াদের নিয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি সংস্থাগুলো বলছে এই সংখ্যা ৫০ হাজারের মতো হতে পারে।
বেসরকারি সংস্থা বন্ধু ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ফসিউল আহসান বলেন পৌরসভা নির্বাচনে দুজন হিজড়ার প্রতিন্দ্বন্দিতা বাংলাদেশে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
“ অন্যান্য হিজড়ারাও মনে করবে যে এখন তাদেরও যোগ্য হতে হবে।”
মি আহসান মনে করেন, গতানুগতিক জীবনধারা থেকে হিজড়ারা বেরিয়ে আসার জন্য অনুপ্রাণিত হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন