বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার, লেখক এবং প্রকাশকদের হত্যার পর বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে আনসারউল্লাহ বাংলা টিম বা আনসার আল ইসলাম নামে দুটি সংগঠনের নাম।
ঢাকায় গত শনিবার প্রকাশক ফয়সল আরেিফন দীপনকে হত্যা এবং আহমেদুর রশিদ চৌধুরী টুটুল সহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করার দুটি ঘটনারই দায় স্বীকার করে আনসার আল ইসলাম নামের সংগঠনটি।এর আগে অভিজিৎ রায় সহ আরও কয়েকজন ব্লগারকে হত্যার পর দায় স্বীকার করেছিল আনসারউল্লাহ বাংলা টিম নামে আরেক জঙ্গী সংগঠন।
ঢাকায় গোয়েন্দারা বলছে, নাম আলাদা হলেও, এই দুটো আসলে একই সংগঠন।
কিন্তু এই সংগঠনটির নেপথ্যে আসলে কারা?
গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ ব্লগারদের হত্যার ঘটনার তদন্ত করছেন। তিনি বলছিলেন, ব্লগারদের হত্যার ঘটনাগুলোর তদন্তে পুলিশ যেসব তথ্য পেয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গী সংগঠনটি কয়েক স্তরে ভাগ হয়ে ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে এবং সরাসরি হত্যাকান্ডে যারা থাকছে, তারা একেবারে নীচের স্তরের। তারা তাদের উপরের স্তরের কাউকে চেনেনা।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেছেন, সরাসরি হত্যায় জড়িতরা কম বয়সের এবং আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিকে ব্যবহার করা হতো। এখন মাদ্রাসার শিক্ষার্থিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশ এমন তথ্য পাচ্ছে।
পুলিশের ধারণা, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম কয়েক বছর আগে ইন্টারনেট ভিত্তিক তৎপরতা শুরু করেছিল।
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এই সংগঠনটি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি হত্যার ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।
বছর দুয়েক আগে এই সংগঠনের মুল নেতা জসিমউদ্দিন রাহমানিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এরপর নতুন নেতৃত্ব সংগঠিত হয়েছে বলে পুলিশ মনে করছে।
কিন্তু এরআগে ব্লগার হত্যার ঘটনায় হাতেনাতে কয়েকজন ধরা পড়লেও মুল ব্যক্তিদের সম্পর্কে পুলিশ সুনির্দিষ্ট তথ্য পাচ্ছে না।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেছেন, সংগঠনটির সাংগঠনিক কাঠামোয় একস্তরের লোকজন তাদের অন্যস্তরের ব্যক্তিদের চেনেনা । ফলে পরিকল্পনাকারি বা মুল ব্যক্তিদের তথ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নূর খান লিটন মনে করেন, বাংলাদেশে জঙ্গী সংগঠনগুলোর নেতারা জেলে রয়েছেন।
কিন্তু ছোট ছোট এই সংগঠনগুলো এখন একে অপরের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে গোপন এবং চোরগোপ্তা ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন