রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৫

‘চাকরির পরীক্ষা কত দিয়েছি তার হিসাব করতে পারবো না’

 
    বিবিসি একশো নারী
                 প্রথম সংগ্রামটা আফিয়াকে করতে হয়েছিল একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করার জন্য।

বগুড়ার কাহালু উপজেলায় জন্ম আফিয়া রাহমাতির। পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর এক চোখ স্বপ্ন তার।
কিন্তু সেই পথ পাড়ি দেয়া আফিয়ার জন্য ছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। প্রথম বারের মত ঢাকা শহরে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে।
তবে এই শহরে ছিল না তার পরিচিত কেউ। একেবারে অচেনা অজানা এক শহরে শুরু হয় তার পথ চলা।
প্রথম সংগ্রামটা আফিয়াকে করতে হয়েছিল একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করার জন্য। প্রথম তিন মাস সাবলেট- পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে।
পাঁচ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত হলেন তিনি। পড়াশোনা আর হাতখরচের জন্য করেছেন কয়েকটি টিউশনি।
তবে মাস্টার্স শেষে তাকে আবারো পড়তে হয় সেই একই সমস্যায়, 'একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই'।
বিবিসি একশো নারী
বগুড়ার কাহালু উপজেলায় জন্ম আফিয়া রাহমাতির।
আফিয়া বলছিলেন “ বাড়িওয়ালারা যখনই জানতে চাইতেন কে থাকবে? আমি বলতাম আমি একা। তখনি তারা না বলে দিত। না হলে ভাড়া দুই গুণ বাড়িয়ে বলতো"।
অবশেষে তিনি ছোট একটি বাসা জোগাড় করতে পেরেছিলেন। তবে এবারে যে একটা ভাল চাকরি পাওয়া দরকার। যে স্বপ্ন চোখে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন সেটা পূরণ করতে হবে তাকে।
শুরু হলো পত্রিকা দেখে চাকরির আবেদন করা। আফিয়ার ভাষায় “কত চাকরির আবেদন করেছি এবং কত অসংখ্য চাকরির পরীক্ষা দিয়েছি তার হিসেব আজ নিজেই করতে পারি না"।
ঢাকার মত বড় শহরে থাকা, নিজেকে মানিয়ে নেয়া, কারো সাহায্য না নিয়ে একের পর এক পরীক্ষা দিয়ে যাওয়া এসব ছিল একেবারেই একার যুদ্ধ।
তিনি বলছিলেন “সেসব দিনগুলোতে বড় বেশি মনে পড়ত বাবা-মাকে, কিন্তু আমি সব কিছু নিজে নিজেই করেছি"।
তিনি আজ কাজ করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে। আফিয়া বলছিলেন নিজেকে তিনি তিল তিল করে স্বাবলম্বী করে তুলছেন।
আর এই আনন্দ আর তৃপ্তি তাকে সামনে চলার জন্য আরো উৎসাহিত করে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন