খাদ্যশস্য ব্যবহার করে জ্বালানি উৎপাদনের কারণে বাজারে খাদ্য পণ্যের সংকট তৈরি হতে পারে বলে ওয়াশিংটনে এক সভায় সতর্ক করলেন বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে বুধবার ‘আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা ইনিস্টিটিউট’র এক সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।
উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্ধশতাধিক নীতি নির্ধারকের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধি ও গবেষকরা এতে অংশ নেন।
চার দশকের কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় নিজেদের মতামত তুলে ধরেন তারা।
সম্মেলনে বক্তব্যে জ্বালানি উৎপাদনে খাদ্যশস্য ব্যবহারের সমালোচনা করে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, “বায়ো জ্বালানি উৎপাদনে বাজারে খাদ্যশস্যের সংকট সৃষ্টি হতে পারে। এতে বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ঘটতে পারে।”
বায়ো জ্বালানি উৎপাদনে ভূট্টা ব্যবহারের প্রবণতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এর ফলে খাদ্যশস্য হিসেবে ভূট্টার ঘাটতি দেখা দেবে এবং বাজারে ভূট্টার দামও বেড়ে যাবে। অপরদিকে ভূট্টা চাষ ও গম চাষের জমিও কমে যাচ্ছে।
“জীবাশ্ম জ্বালানির একটি পরিবেশবান্ধব টেকসই বিকল্প হিসেবে কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি বায়ো জ্বালানি উৎপাদন উৎসাহিত করছে, যদিও তা সুদূরপ্রসারী সুফল বয়ে আনবে না।”
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চাল উৎপাদনে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বার্থে কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।
“শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা সকলে এ সেক্টরে গৃহীত সকল কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে মনোনিবেশ করেছি। সেজন্য বাংলাদেশে কৃষি ও অর্থনৈতিক সেক্টরে ভাল অগ্রগতি হয়েছে-যা কারও অজানা নেই।”
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাবারের চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার প্রভাব এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নানও সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
আইএফপিআরআই-এর ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, চিলি, ব্রাজিল, ইথিওপিয়া, চীন, ভারত ও পাকিস্তানের গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা।
খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি ও পুষ্টি, বাজার, বাণিজ্য ইত্যাদির ওপর বক্তব্য রাখেন তারা।
২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে ক্ষুধা ও অপুষ্টির অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয় সম্মেলনে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন