যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না সে প্রশ্নের কোনো জবাব এখনও পাননি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ
মুজাহিদ ও সালাউদ্দিনের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছানোর পর থেকে সেখানে ভিড় করে আছেন সাংবাদিকরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল (ফাইল ছবি)
তারা আবেদন না করলে বা রাষ্ট্রপতির অনুকম্পা না পেলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ, যার সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে বলে ডিআইজি প্রিজন গোলাম হায়দার জানিয়েছেন।
রাতে রায়ের অনুলিপি কারাগারে পৌঁছানোর পর দুই ফাঁসির আসামিকে তা পড়ে শোনানো হয় বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গোলাম হায়দার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কাল ট্রাইব্যুনাল থেকে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর আমরা তাদের পড়ে শুনিয়েছি। ক্ষমা চাইবেন কি না জানতে চেয়েছি।
“উনারা বলেছেন, সিদ্ধান্ত পরে জানাবেন। উনাদের সিদ্ধান্ত জানার জন্য আজও আমরা তাদের কাছে যাব।”
এদিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দুপুর থেকে কারাফটকের সামনে অবস্থান করছেন তার আইনজীবীদের কয়েকজন।
তার আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান আলফেসানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রাণভিক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানানোয় তারা কারা ফটকে এসেছেন।
একাধিকবার তারা সালাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি। লিখিত আবেদন নিয়ে গেলেও তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
রিভিউ খারিজের পর আর আসামির সঙ্গে আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও তারা কেন এসেছেন জানতে চাইলে হুজ্জাতুল বলেন, “এর আগে কামারুজ্জামানের রিভিউ খারিজের পর প্রাণভিক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগে তার সঙ্গে আইনজীবীদের দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তাই আমরা এসেছি।”
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনি আপিল করলে চলতি বছরের ১৬ জুন চূড়ান্ত রায়েও ওই সাজা বহাল থাকে।
একাত্তরে চট্টগ্রামের ত্রাস সালাউদ্দিন কাদেরের রায় এসেছিল ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির রায় এ বছর ২৯ জুলাই আপিলের রায়েও বহাল থাকে।
তাদের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় একই দিনে, ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল দুজনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে এবং কারা কর্তৃপক্ষ ১ অক্টোবর তা দুই ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনায়।
এরপর দুই যুদ্ধাপরাধী ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বুধবার আদালত তা খারিজ করে দেয়।
রিভিউর রায় হওয়ার পর বুধবার থেকেই কারাফটকে জোরদার নিরাপত্তা রয়েছে। সাঁজোয়া যান নিয়ে পুলিশের অবস্থানের পাশাপাশি রয়েছে র্যাবের টহলও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন