ভারতের রাজধানী দিল্লিতে কেরালা রাজ্য সরকারের অতিথিশালার মেনুতে গরুর মাংস রাখার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেখানে হানা দিলে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
কট্টর একটি হিন্দু সংগঠন পুলিশের কাছে এই অভিযোগ করে।তবে অতিথিশালার কর্মচারীরা পুলিশের কাছে জানায় তাদের মেনুতে গোমাংস নয়, মহিষের মাংস রয়েছে।
রাজ্য অতিথিশালায় এ ধরণের পুলিশী হানার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন স্বয়ং কেরালার মুখ্যমন্ত্রী। ক্রুদ্ধ ওমেন চান্দি বলেন, "গো-মাংসের খোঁজে সরাসরি রেস্তোরায় তল্লাশির আগে দিল্লি পুলিশের উচিৎ ছিল কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলা।"
গোমাংসের খোঁজে কেরালা হাউজে পুলিশী হানার তীব্র নিন্দা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
ভারতের অল্প যে কটি রাজ্যে এখনো গরু জবাই নিষিদ্ধ হয়নি, কেরালা সেগুলোর একটি।
তবে দিল্লিতে সোমবার রাতের এই ঘটনার পর কেরালা রাজ্য অতিথিশালার মেনু থেকে বিফের সমস্ত আইটেম প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অতিথিশালার কর্মচারীরা পুলিশের নিরাপত্তা চেয়েছেন।
চাপে পড়ে দিল্লির পুলিশ অবশ্য এখন দাবি করছে, তারা গো-মাংসের খোঁজে কেরালার অতিথিশালায় যায়নি। বরঞ্চ অভিযোগের সূত্র ধরে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির যেন সৃষ্টি না হতে পারে সেই চেষ্টাই তারা করছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, হিন্দু সেনা নামে একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত যে ব্যক্তি টেলিফোনে অভিযোগ করেছিলেন, তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হিন্দুত্ববাদি বিভিন্ন সংগঠন গরুর মাংস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার জন্য তীব্র আন্দোলন শুরু করেছে। তাদের এই আন্দোলন বিভিন্ন সময় মুসলমানদের প্রতি সহিংসতার গড়াচ্ছে।
সম্প্রতি উত্তরর প্রদেশে রাজ্যের একটি গ্রামে বাড়িতে গরুর মাংস রাখার গুজবে ৫০ বছরের একজন মুসলিমকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক
দিল্লিতে কেরালার অতিথিশালায় পুলিশী হানার ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ইন্টারনেটে সামাজিক গণমাধ্যমেও বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ইংরিজি দৈনিক দি টেলিগ্রাফের একটি সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, "কেরালার বিখ্যাত বিফ কারির কাঁটা সংঘ পরিবারের গলায় গিয়ে আটকেছে।"
টুইটারে কেরালা হাউস হ্যাশট্যাগে ব্যাপক লেখালেখি হচ্ছে।
রঘুরাম নামে একজন টুইটারে মন্তব্য করেছেন, "দিল্লিতে এখন একজন মেয়ে হয়ে বসবাস করার চাইতে গরু হয়ে থাকা উত্তম। bbc
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন