সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫

শেষ ম্যাচে সান্তনার জয় জিম্বাবুয়ের

প্রাণআপ টি-টোয়েন্টিতে ১-১ সিরিজ ড্র শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছ থেকে ট্রফি গ্রহণ করছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং জিম্বাবুয়ে দলপতি চিগুম্বুরা -ইন্টারনেট

  • বাংলাদেশ-১৩৫/৯ (২০ ওভার)
  • জিম্বাবুয়ে-১৩৬/৭ (১৯.৫ ওভার)
  • জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী। 
রফিকুল ইসলাম মিঞা : শেষ ম্যাচে জয় দিয়েই বাংলাদেশ সফর শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে। গতকাল দু’ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে তিন উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। ফলে ওয়ানডে ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ হওয়া জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা রেখেছে ১-১। কারণ টি-টোয়েন্টি সিরিজটি থাকলো অমীমাংসিতই। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ৬ উইকেটে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ে জয় পেল তিন উইকেটে। ফলে দেশে ফিরার আগে অন্তত একটি সান্ত¦নায় জয় নিয়ে দেশে ফিরতে পারছে দলটি। তবে শেষ ম্যাচে জয় দিয়ে বছর শেষ করার টার্গেট থাকলেও সেটা পারেনি টাইগাররা। পুরো সিরিজ ভালো খেলে শেষ ভালোটাই করতে পারেনি বাংলাদেশ। গতকাল আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে করে ১৩৫ রান। জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের সামনে টার্গেট ছিল ১৩৬ রান। জিম্বাবুয়ে এক বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে ১৩৬ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় তিন উইকেটে। আর এক বল বাকি থাকতে ছক্কা মেরে দলকে জয় এনে দেয়া মাদজিবা ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও পান। আর সিরিজসেরা পুরস্কার পান ওয়ালার।
জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের সামনে টার্গেট ছিল ১৩৬ রান। টার্গেটটা সহজই ছিল আগের ম্যাচে ১২৩ রান করা জিম্বাবুয়ের জন্য। কিন্তু এই টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়েও শুরুটা ভালো করতে পারেনি। কারণ ৭ রানে প্রথম দু’ উইকেট হারানো দলটি ফিফটি রান করার আগেই হারায় ৫ উইকেট। ওপেনার সিকান্দার রাজা ৫ রানে আউট হওয়ার পর উইলিয়ামস আইটন হন শূন্য রানে। আর অপর ওপেনার ছাকাভা ৪ রানে আউট হলে দলীয় ৫ রানেই দলটি হারায় প্রথম তিন উইকেট। দলীয় ৩৩ রানে চতুর্থ আর ৩৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারানো দলটির চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকে। এরভাইন ৫ রান করলেও চিগুম্বুরা রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন। তবে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে জং উইয়ে আর ওয়ালার জুটি করে দলকে ভালোই এগিয়ে নেন। আল-আমিনের বলে এই গুরুত্বপূর্ণ জুটি ভাঙ্গার আগেই দলটি পৌঁছে যায় ৯৪ রানে। এই জুটির ওপর ভর করেই শেষ ম্যাচে জয়ের স্বপ্ন দেখে সফরকারী দলটি। কিন্তু আল-আমিনের বলে ইমরুলের হাতে ক্যাচ আউট হয়ে ৩৪ রানে জং উইয়ে ফিরলে আবার চাপে পড়ে দলটি। তবে ওয়ালার আর মাদজিবার ব্যাটিং তখনও আশায় রাখে দলটিকে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৮ রান। নাসির বল করতে এসে প্রথম বলেই তুলে নেন বিপদজনক ওয়ালারের উইকেটটি। নাসিরের বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে ওয়ালার করেন সর্বোচ্চ ৪০ রান। ওয়ালার আউট হলে জয়ের পথটা সহজই মনে করেছিল টাইগাররা। কিন্তু লাইফ পাওয়া মাদজিবার আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে শেষ দু’ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬ রান। কিন্তু নাসিরের পঞ্চম বলে মাদজিবা সরাসরি ছক্কা মেরেই দলকে জয় এনে দেন। কারণ এক বল বাকি থাকতেই জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে পৌঁছে যায় টার্গেট ১৩৬ রানে। মাদজিবা ৯ বলে তিন চার আর দু’ ছক্কায় ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশের পক্ষে আল-আমিন তিনটি উইকেট নেন।
এর আগে শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বড় স্কোর গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। ৯ উইকেটে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৩৫ রান। দলের পক্ষে এনামুল হক ছাড়া কোন ব্যাটসম্যানই ভালো স্কোর করতে পারেনি। দলের পক্ষে এনামুল হক করেছেন সর্বোচ্চ ৪৭ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেন ওপেনার তামিম ইকবাল। গতকাল ব্যাট করতে নেমে দু’ ওপেনার তামিম-ইমরুল শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু ৩৫ রানের মধ্যে দু’ ওপেনারের বিদায়ে একটু চাপেই পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে তামিম লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ২১ রানে। দলীয় স্কোর তখন ৩৪ রান। ১৫ বলে ২১ রান করেন তামিম। এর পর দলীয় ৩৫ রানে ফিরলেন ইমরুলও। শন উইলিয়ামসের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হয়ে ফিরার আগে ইমরুল করেন ১০ রান। ব্যাট করতে নেমে অভিজ্ঞ মুশফিকও ভালো করতে পারেননি। মাত্র ৯ রান করে ক্রেমারের শিকার মুশফিক। তবে চতুর্থ উইকেটে এনামুল হক বিজয় আর সাব্বির মিলে ৩৯ রানের জুটি করে দলের প্রাথমিক চাপটা কাটান। তবে ১৭ রানে এলবির ফাঁদে পড়ে আউট হন সাব্বির। এর পর এনামুল এক প্রান্ত আগলে থাকলেও অন্য প্রান্তে ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল। নাসির ৩ রানে, রিয়াদ ৮ রানে আর আরাফাত সানি ৫ রানে আউট হওয়ার পর মাশরাফিকে ফিরতে হয়েছে শূন্য রানেই। তবে এই আসা-যাওয়ার মাঝে এনামুল হক বিজয়ের ওপর নির্ভর করেই শতরান পার করে বাংলাদেশ। ইনিংসের শেষ ওভারে রান আউট হওয়ার আগে বিজয় করেন ৪৭ রান। এতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩৫ রানের ইনিংস গড়তে পারে বাংলাদেশ। ৫১ বলে ৩টি চারে সাজানো ছিল বিজয়ের ইনিংসটি। জিম্বাবুয়ের পক্ষে পানিয়াঙ্গারা ৩টি, মাদজিবা ও ক্রেমার নেন ২টি করে উইকেট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন