বাংলাদেশে সুন্দরবনের কাছে কয়লাসহ জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনার ক্ষেত্রে জাহাজটির ফিটনেস না থাকা এবং চালকের গাফিলতিকে দায়ী করেছে তদন্ত কমিটি।
একইসাথে আবারও বন বিভাগের এই তদন্ত কমিটি সুন্দরবনের ভিতরে নদী দিয়ে পণ্যবাহীসহ সব ধরণের জাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে।গত ২৭ শে অক্টোবর পশুর নদীতে ৫১০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর এখনও উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়নি।
নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বলেছে, জাহাজ উদ্ধারের সরেজমিন জরিপ হয়েছে এবং শনিবার থেকে উদ্ধার কাজ শুরুর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, গত এক বছরে তেল বা সারসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে সুন্দরবন এলাকায় চারটি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এরপরও সুন্দরবনে ভিতরে নদী ব্যবহার করে পরিবেশ বা বনে ক্ষতিকর পণ্য আনা নেয়া করা হচ্ছে।
সুন্দরবনের ভিতরে এর আগে শ্যালা নদীতে তেলবাহী এবং সারবাহী জাহাজ ডুবে বনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এবার কয়লাবাহী জাহাজটি যদিও সুন্দরবন থেকে কিছুটা দূরত্বে পশুর নদীতে ডুবেছে। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, জাহাজ ডোবার পর তিনদিনও উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়নি। আরও দেরি হলে কয়লা থেকে দুষণের আশংকা রয়েছে এবং এর প্রভাব সুন্দরবনেই পড়বে।
বন বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে শ্যালা নদী ব্যবহার করেই কয়লাবাহী জাহাজটি পশুর নদীতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে।
তদন্ত কমিটির প্রধান এবং বন বিভাগের কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেছেন, জাহাজটির ফিটনেস সার্টিফিকেট ছিল না এবং চালকও ছিল অদক্ষ। দুর্ঘটনার পিছনে এগুলোকে তারা অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেছেন, তারা আবারও সুন্দরবনের ভিতরে শ্যালা নদী দিয়ে জাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছেন।
এর আগেও যখন তেলবাহী জাহাজ সুন্দরবনের ভিতরে শ্যালা নদীতে ডুবেছিল তখন এই রুট বন্ধ করার বিষয়টি ইস্যু হয়েছিল। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো ঐ দাবি নিয়ে আন্দোলনেও নেমেছিল।
বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুনিল কুমার কুন্ডু বলেছেন, সুন্দরবনের ভিতরের নদীগুলো দিয়ে জাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বন বিভাগ দীর্ঘ সময় ধরে বলে আসছে। কিন্তু বন বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই জাহাজ চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
তবে অভ্যন্তরীন নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডোর মোজাম্মেল হক বলেছেন, সুন্দরবনের বাইরে মোংলা ঘসিয়াখালী নতুন রুট দিয়ে পহেলা অক্টোবর থেকে দিনের বেলা জাহাজ চলাচল শুরু করা হয়েছে।
কিন্তু এই চ্যানেলে পশুর এবং বলেশ্বর-দু’টি নদী থেকে পলি এসে জমে। সেজন্য ড্রেজিং মেশিন দিয়ে একদিকে খনন কাজ চলে, আর পাশ দিয়ে সীমিত পর্যায়ে জাহাজ চলাচল করে।
কমোডোর হক আরও বলেছেন, নদীর খনন কাজ শেষ করে চ্যানেলটি পুরোপুরি চালু করতে আরও সময় প্রয়োজন।
নৌ পরিবহণ সচিব শফিক আলম মেহেদী বলেছেন, নতুন রুট জাহাজ চলাচলের পুরোপুরি উপযুক্ত করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে এখন সেখানে কাজ চলছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন