শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৬

পশ্চিমবঙ্গের কামদুনি গণধর্ষণ: ৩ জনের ফাঁসি


Image copyrightEPA
Image captionভারতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ
পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার উপকণ্ঠে কামদুনি গ্রামে এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের দায়ে তিনজনকে আজ ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাকি তিনজনকে আমৃত্যু কারাবাসের আদেশ দিয়েছে কলকাতা নগর দায়রা আদালত।
বৃহস্পতিবার এই ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক সঞ্চিতা সরকার।
২০১৩ সালের ওই নৃশংস ঘটনায় মোট নয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
একজন অভিযুক্ত বন্দীদশাতেই মারা যান, অন্য দুজনকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত।
অভিযোগ উঠছে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় খালাস পাওয়া দুজনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ যোগাড় করেন নি তদন্তকারীরা।
এদের খালাসের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপীল করা হবে।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে দুদিন ধরে সাজা নিয়ে সওয়াল জবাব চলে সরকার ও দোষীদের আইনজীবীদের মধ্যে।
তারপরেই আজ বিকেলে সাজা ঘোষণা করা হয়।
Image copyrightAP
Image captionভারতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বাড়ছেই
সইফুল আলি, আনসার আলি আর আমিন আলি – এই তিনজনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
আমিনুর ইসলাম, ভোলা নস্কর, এমানুল ইসলাম – এদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের ৭ই জুন দুপুরে কলেজ থেকে হেঁটে গ্রামের বাড়ির দিকে যাওয়ার সময়েই ওই ছাত্রীকে একটি পরিত্যক্ত কারখানায় নিয়ে যায় দোষীরা।
সেখানে তাকে গণধর্ষণ করে প্রমাণ লোপাটের জন্য পা চিরে দিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনাকে বিরলতম আখ্যা দিয়ে বিচারক তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আজ।
দোষীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে গত আড়াই বছর ধরেই আন্দোলন করে আসছেন ওই ছাত্রীর গ্রামের দুই বান্ধবী আর তার ছোটবেলার স্কুলের শিক্ষক।
দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছেও গিয়েছিলেন তারা।
ঘটনার দশ দিন পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কামদুনি গ্রামে গেলে নির্যাতিতার ওই দুই বন্ধু যখন তাকে প্রশ্ন করেন, তখনই মিজ. ব্যানার্জী তাদের মাওবাদী আখ্যা দিয়েছিলেন।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব গ্রামবাসীদের ওই প্রতিবাদ আন্দোলনকে অনেকটাই স্তিমিত করে দিতে সক্ষম হয়।
নির্যাতিতার পরিবারকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তার ভাইকে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়।
আন্দোলন থেকে সরে গেলেও নির্যাতিতার পরিবার দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তিই চেয়েছিল।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

'জিকা ভাইরাসের প্রতিষেধক পেতে দশবছর লাগবে'


Image copyrightAP
Image captionকোনও নারী যদি গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে ছোট বা বিকৃত মস্তিষ্ক নিয়ে শিশুর জন্ম হতে পারে।
গত কয়েকদিন ধরে বিশ্বজুড়ে একটি আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে জিকা ভাইরাস। এর দ্বারা আক্রান্ত হলে তার কোনও চিকিৎসা নেই, প্রতিষেধকও নেই।
গবেষকরা বলছেন, ব্যবহারের উপযোগী একটি প্রতিষেধক তৈরি করে বাজারে ছাড়তে দশ বছর সময় লেগে যেতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের গবেষণাগারে চলছে এই জিকা ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির কাজ।
সম্প্রতি মানুষের নজরে আসা এই মশা বাহিত ভাইরাসটি দ্বারা গর্ভবতী মায়েরা আক্রান্ত হলে শিশু বিকৃত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মাতে পারে।
গত কয়েক মাস ধরে ক্যারিবিয়ান ও দক্ষিণ আমেরিকার কুড়িটিরও বেশী দেশে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ।
Image captionজিকা ভাইরাসের প্রতিষেধকের জন্য চলছে গবেষণা
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের একটি হাই সিকিউরিটি গবেষণাগারের গবেষকরা এখন ব্রাজিল থেকে সংগ্রহ করা নমুনার ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন।
গবেষক ড. শাহনান রসি বলেছেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হচ্ছে তাদের। এটা অন্যান্য প্রাণীকে আক্রান্ত করতে পারে কিনা? মানুষের দেহে এটা কতদিন থাকে? ঠিক কোন মশাগুলো জিকার বাহক?
তিনি জানান, এখনও গবেষণার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন তারা।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী বছর নাগাদ পরীক্ষামূলক হলেও, একটি প্রতিষেধক হয়তো উদ্ভাবন করতে পারবেন তারা।
কিন্তু নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এর জন্য একটা অনুমোদন বের করাটা নিশ্চিতভাবেই অনেক সময়সাপেক্ষ হবে।
Image copyrightEPA
Image captionজিকা ভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতা।
গবেষকরা বলছেন, কার্যকর একটি প্রতিষেধক তৈরিতে খুব বেশী সময় লাগবে না, কিন্তু দীর্ঘ সময় লেগে যাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে এবং বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র পেতে। এজন্য দশ থেকে বারো বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
আর যেসব পোকামাকড় প্রাণঘাতী জীবাণু বহন করে সেগুলো নিয়ে কাজ করাও কম ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের গবেষণাগারে প্রতিষেধক তৈরির জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে পনেরো হাজারের মত মশা সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয়েছে। এগুলোকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে।

বুধবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৬

৫০ বছরে ফেলুদা:এই চরিত্র জেমস বন্ডের মতো হলো না কেন?


Image captionকলকাতায় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আলোচনা।
প্রদোষ চন্দ্র মিত্রের প্রথম আবির্ভাব হয়েছিল আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে ছোটদের পত্রিকা সন্দেশে। এই প্রদোষ চন্দ্র মিত্রের ডাকনাম ফেলুদা।
১৯৬৫ সালে জন্ম ফেলুদা চরিত্রটির – একটা ছোট গল্পের মাধ্যমে । এক বাঙালী গোয়েন্দা তিনি সেই সময়ে তার বয়স ছিল ২৭ বছর।
কিন্তু তারপরের ৫০ বছর ধরে একই চেহারা রয়ে গেছে চরিত্রটার। সাধারণ বাঙালী যে সমস্যার সমাধান করতে পারেন না, সেটা একমাত্র পারেন সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা।
এখনও ফেলুদার সিনেমা হাউসফুল হয়ে চলে সপ্তাহের পর সপ্তাহ। বাঙালী পাঠককে দুই জেনারেশনেরও বেশী সময় ধরে মাতিয়ে রেখেছে এই ফেলুদা চরিত্রটি।
অপরাধীদের ধরার জন্য কিভাবে কৌশল অবলম্বন করতে হয় সে বিষয়টি উঠে এসছে ফেলুদা চরিত্রে।
খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের তৈরি করা এই চরিত্র দশকের পর দশক পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের পাঠকদের মন মাতিয়ে রেখেছে। আজ থেকে ৫০ বছর আগে সত্যজিৎ রায় এই চরিত্রটি তৈরি করেন।
Image captionফেলুদা সিরিজের বই পাঠকদের কাছে এখনো জনপ্রিয়।
এই পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে কলকাতায় একটি বই প্রকাশ করা হলো। ক্রিকেট ইতিহাসবিদ বোরিয়া মজুমদার এই বইটি লিখেছেন।
কিন্তু পঞ্চাশ বছর পর এই ফেলুদা চরিত্রটি পাঠক এবং দর্শকদের মনে কতটা দাগ কাটতে পারছে?
মি: মজুমদার বলেন এই ফেলুদা হচ্ছে এমন একটি চরিত্র যার সাথে সাধারণ পাঠক নিজেদের মেলাতে পারেন।
ফেলুদা চরিত্রটির চালন-বলন, আচার-ব্যবহার এবং ভাষা – সবকিছুই একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালীর মতো।
মি: মজুমদার বলছেন জেমস বন্ড বা শার্লক হোমস হচ্ছে স্বপ্নের চরিত্র। তার কাছে মানুষ পৌঁছতে পারেনা। কিন্তু অনেক মানুষ নিজেকে ফেলুদার জায়গায় ভাবতে পারেন।
এই প্রকাশনা উৎসবে প্রায় এক হাজারের মতো লোক জড়ো হয়েছিলেন।
Image copyrightBoria Majumder
Image captionবোরিয়া মজুমদারের প্রকাশনা।
অনুষ্ঠানে আসা একজন দর্শক বলেন, “আমরা যতটা ট্রাই (চেষ্টা) করি আদর্শ মানুষ হবার, ফেলুদা হচ্ছে সেই আদর্শ চরিত্র।”
ফেলুদা চরিত্রটিকে নিয়ে সত্যজিৎ রায় ৩৫টি গল্প লিখেছেন। গল্পের পাশাপাশি ফেলুদা চরিত্রটিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক সিনেমা এবং টেলিভিশন ধারাবাহিক।
কিন্তু ফেলুদাকে নিয়ে একটি হিন্দি টেলিফিল্ম ছাড়া অন্য ভারতীয় ভাষায় কোন সিনেমা হয়নি। এর কারণটা কী?
সত্যজিৎ রায়ের ছেলে এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সন্দীপ রায় বলেন, “ ফেলুদা ট্রান্সলেট (অন্য ভাষায়) করা খুব কঠিন। এই গল্পে যে বাঙালিয়ানা আছে সেটাকে অন্যভাষায় অনুবাদ করা যায়না।”
ফেলুদা হচ্ছে এমন একটি চরিত্র যার সাথে প্রযুক্তির কোন সম্পর্ক নেই। তিনি মোবাইল ফোন, ফেসবুক কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না।
মি: মজুমদার প্রশ্ন তোলেন তাহলে এই প্রজন্মের কাছে ফেলুদা চরিত্রটি কতটা প্রাসঙ্গিক থাকবে? এই চরিত্রটিকে এগিয়ে নিতে কী করা দরকার? এ বিষয়গুলো মি: মজুমদার তার বইতে তুলে ধরেছেন।
Image copyrightGetty
Image captionজেমস বন্ড সিরিজ দুনিয়াজুড়ে ব্যবসাসফল একটি চরিত্র।
পশ্চিমা দেশগুলোতে জেমস বন্ড এবং শার্লক হোমসকে নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সেই চরিত্রগুলোকেও এগিয়ে নেয়া হয়েছে। সেই তুলনায় ফেলুদা চরিত্রটি কি থমকে গেছে?
মি: মজুমদার বলেন জেমস বন্ড এবং শার্লক হোমস শিল্পে পরিণত হয়েছে যেটিকে কেন্দ্র করে ব্যবসা হচ্ছে প্রচুর।
তিনি বলেন, “ যেখানে জেমস বন্ড থিম পার্ক হচ্ছে, সেখানে কেন ঢাকায় বা কলকাতায় ফেলুদাকে নিয়ে মিউজিয়াম হবেনা?”
তিনি বলেন জেমস বন্ড এবং শার্লক হোমসের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে ফেলুদা ব্র্যান্ডকে এগিয়ে নিতে হবে।

জিকা ভাইরাস নিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রেও সতর্কতা


জিকা ভাইরাস নিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রে সতর্কতা
Image captionসোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে যে পুরো আমেরিকাজুড়ে মশাবাহিত জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যাতে জিকা ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে না পড়ে তাই এবার সতর্কতা জারি করলো মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
কোনও নারী যদি গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে ছোট বা বিকৃত মস্তিষ্ক নিয়ে শিশুর জন্ম হতে পারে।
জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আছে এমন সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা গর্ভবতী নারীদের বিশেষ পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে।
ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের খবর প্রকাশের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষ সাবধানবাণীর পর যুক্তরাষ্ট্রও এখন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ার ঘোষণা দিলো।
যেসব শিশুদের দেখে সন্দেহ হবে যে তারা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের কিভাবে পরীক্ষা করা হবে, পাশাপাশি গর্ভবতী নারীদেরও কিভাবে পরীক্ষা করা হবে সে বিষয়েও বিভিন্ন নিয়মাবলী দেয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
গর্ভবতী নারীরা মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা বা তারা বিদেশ থেকে এ রোগ নিয়ে এসেছে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার ডাক্তারদের গর্ভবতী নারীদের ভ্রমণের বৃত্তান্ত জেনে সেটা নিয়ে গবেষণা করতে বলা হয়েছে।
জিকা ভাইরাস নিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্রে সতর্কতাImage copyrightGetty
Image captionগর্ভবতী নারীরা মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা বা তারা বিদেশ থেকে এ রোগ নিয়ে এসেছে কিনা সে বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে ক্যারিবিয়ান এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ২১ টি দেশে এ ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, সেসব এলাকার নারীদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে বলা বলা হচ্ছে।
এদিকে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২ লাখ ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে ব্রাজিল সরকার।
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো স্টেডিয়াম মশামুক্ত করার জন্য পুরো স্টেডিয়ামে মশা নিধনের ধোঁয়া দেয়া হয়েছে।
ব্রাজিলের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা মার্কাস ভিনিশাস ফেরেইরা বলছেন জিকা ভাইরাসের হুমকি মোকাবেলায় সকল চেষ্টাই চলছে।
তিনি এখানে বলেছেন, জিকা ভাইরাসের যে ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে তার অতীতের তুলনায় বড় কিছু নয়। চার বছর আগে সংক্রমণের হার ২.৯ শতাংশে এ বছর সেটি এক শতাংশে এসেছে বলে তিনি জানান।
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে যে পুরো আমেরিকাজুড়ে মশাবাহিত জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এরপরই যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ার ঘোষণা দিলো।
গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বিকৃত মাথা নিয়ে জন্ম নিতে পারে শিশু।

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

Artile

Artile
Artile

ইতিহাসের সাক্ষী : সোভিয়েত শ্রমশিবিরে পাঁচ বছর

১৯৪০এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে জোসেফ স্টালিনের শাসনের সময় লক্ষ লক্ষ লোককে বন্দী করে পাঠানো হয়েছিল শ্রম শিবিরে।

সেখানে তাদেরকে মানবেতর পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করা হতো। এগুলোকে বলা হতো গুলাগ। এখানে মৃত্যু হয়েছিল দশ লাখেরও বেশি বন্দীর - যার কারণ ছিল অনাহার, রোগ এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি।
এমনি একটি শিবিরে পাঁচ বছর কাটিয়েও বেঁচে ছিলেন লিওনিদ ফিংকেলস্টাইন।
ফিংকেলস্টাইনImage copyrightbbc
Image captionগুলাগের বন্দীদের কাজ ছিল কঠোর শারীরিক শ্রমসাধ্য কাজ করা
তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছিলেন একজন রাশিয়ান প্যারাট্রুপার বা ছত্রী সেনা। ১৯৪৭ সালের গ্রীষ্মকালে রাশিয়ার গোপন পুলিশ রাস্তা থেকে লিওনিদকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
তার অপরাধ ছিল, তিনি রাশিয়ায় ক্রমবর্ধমান ইহুদিবিরোধী মানসিকতার সমালোচনা করে মন্তব্য করেছিলেন।
ফিংকেলস্টাইন যখন সোভিযেত শ্রমশিবিরে তার বন্দী জীবন শুরু করেছিলেন, তখন তার বয়েস মাত্র ২৩ বছর। তখন তিনি ছিলেন একজন ছাত্র।
১৯৪০এর দশকের মধ্যে জোসেফ স্টালিন পাঁচশরও বেশি শ্রমশিবির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
witness_gulag_finkelstein
Image captionলিওনিদ ফিংকেলস্টাইন
এগুলো স্থাপিত হয়েছিল সোভিযেত ইউনিয়নের সবচাইতে প্রত্যন্ত এবং জনমানবশূন্য জায়গায়।
এগুলোতে যাদের পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে ছিল ছিঁচকে অপরাধী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী এবং লিওনিদের মতো লোকেরা - যাদের অপরাধ ছিল বেফাঁস কথাবার্তা বলা।
শ্রমশিবিরের এই বন্দীদের কাজ ছিল সোভিয়েত শিল্পকারখানার জন্য শ্রমিক হিসেবে কাজ করা, বা রেললাইন পাতা, খাল কাটা, বা হাইওয়ে তৈরি করা।
প্রচন্ড শীতের মধ্যে, হিমাংকের নিচে কুড়ি ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে ফিংকেলস্টাইন আর তার দলের আরো শ'তিনেক লোক কাজ করতেন বক্সাইটের খনিতে।
gulag_labour_camp_ussrImage copyrightbbc
Image captionবেশির ভাগ গুলাগ ছিল রাশিয়ার প্রত্যন্ত, জনমানবশূন্য এবং ভীষণ ঠান্ডা এলাকায়
কাঁটাতার-ঘেরা শ্রমশিবির থেকে পালানোর চেষ্টা করলে মৃত্যু ছিল অবধারিত
একবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন ফিংকেলস্টাইন। ১৯৫৩ সালে স্টালিনের মৃত্যুর কয়েকমাস পরই তিনি ছাড়া পান।
এর পর ষাটের দশক থেকে তিনি ব্রিটেনে বাস করছিলেন। এ বছরই তিনি মারা গেছেন।
ফিংকেলস্টাইন তার গুলাগ জীবনের কথা বলেছেন বিবিসির মার্ক ল্যানচিওনকে। ইতিহাসের সাক্ষীর এ পর্বটি পরিবেশন করছেন পুলক গুপ্ত।

শনিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬

Artile

Artile
Artile

সৌদি আরবের পর ইরানে গেলেন চীনা প্রেসিডেন্ট


Image copyrightAP
Image captionইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সাথে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
গত সপ্তাহে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর তেহরান সফরে গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
গত এক দশকের মধ্যে এই প্রথম কোন চীনা নেতা ইরানে গেলেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে তার বৈঠকের পর দু’দেশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, চীন এবং ইরান তাদের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে।
ইরান ও চীনের নেতারা শুধু অর্থনৈতিক সম্পর্ক নয়, নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কও আরো জোরদার করার কথা বলেছেন।
বাণিজ্য সম্প্রসারণ থেকে শুরু করে জ্বালানীর ব্যাপারে ১৭টি সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছেন তারা। ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, এসময় কৌশলগত সম্পর্কের ব্যাপারে ২৫ বছরের একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, বিজ্ঞান, আধুনিক প্রযুক্তি, সংস্কৃতি ও পর্যটনের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার মতো বিষয়েও তারা কথাবার্তা বলেছেন।
Image copyrightGetty
Image captionএর আগে সৌদি বাদশাহর সাথে চীনা প্রেসিডেন্ট
“মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবাদ, উগ্রপন্থা এবং সহিংসতা মোকাবেলার ব্যাপারেও আমরা আলোচনা করেছি।”
তিনি বলেন, গোয়েন্দা সহযোগিতার মাধ্যমে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার ব্যাপারেও তাদের কথাবার্তা হয়েছে।
চীন ইরানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ইরানের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর চীনা প্রেসিডেন্ট প্রথম বিদেশি কোনো নেতা যিনি ইরান সফরে গেলেন। এর আগে তিনি সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।
এমন সময়ে চীনা প্রেসিডেন্ট এই দুটো দেশ সফরে গেলেন যখন ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, যেসব এলাকায় এর আগে মার্কিন ও রুশ স্বার্থই প্রাধান্য পেতো সেখানে গিয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তিকেই তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।