১৯৪০এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে জোসেফ স্টালিনের শাসনের সময় লক্ষ লক্ষ লোককে বন্দী করে পাঠানো হয়েছিল শ্রম শিবিরে।
সেখানে তাদেরকে মানবেতর পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করা হতো। এগুলোকে বলা হতো গুলাগ। এখানে মৃত্যু হয়েছিল দশ লাখেরও বেশি বন্দীর - যার কারণ ছিল অনাহার, রোগ এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি।
এমনি একটি শিবিরে পাঁচ বছর কাটিয়েও বেঁচে ছিলেন লিওনিদ ফিংকেলস্টাইন।
তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছিলেন একজন রাশিয়ান প্যারাট্রুপার বা ছত্রী সেনা। ১৯৪৭ সালের গ্রীষ্মকালে রাশিয়ার গোপন পুলিশ রাস্তা থেকে লিওনিদকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
তার অপরাধ ছিল, তিনি রাশিয়ায় ক্রমবর্ধমান ইহুদিবিরোধী মানসিকতার সমালোচনা করে মন্তব্য করেছিলেন।
ফিংকেলস্টাইন যখন সোভিযেত শ্রমশিবিরে তার বন্দী জীবন শুরু করেছিলেন, তখন তার বয়েস মাত্র ২৩ বছর। তখন তিনি ছিলেন একজন ছাত্র।
১৯৪০এর দশকের মধ্যে জোসেফ স্টালিন পাঁচশরও বেশি শ্রমশিবির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এগুলো স্থাপিত হয়েছিল সোভিযেত ইউনিয়নের সবচাইতে প্রত্যন্ত এবং জনমানবশূন্য জায়গায়।
এগুলোতে যাদের পাঠানো হয়েছিল তার মধ্যে ছিল ছিঁচকে অপরাধী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী এবং লিওনিদের মতো লোকেরা - যাদের অপরাধ ছিল বেফাঁস কথাবার্তা বলা।
শ্রমশিবিরের এই বন্দীদের কাজ ছিল সোভিয়েত শিল্পকারখানার জন্য শ্রমিক হিসেবে কাজ করা, বা রেললাইন পাতা, খাল কাটা, বা হাইওয়ে তৈরি করা।
প্রচন্ড শীতের মধ্যে, হিমাংকের নিচে কুড়ি ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে ফিংকেলস্টাইন আর তার দলের আরো শ'তিনেক লোক কাজ করতেন বক্সাইটের খনিতে।
কাঁটাতার-ঘেরা শ্রমশিবির থেকে পালানোর চেষ্টা করলে মৃত্যু ছিল অবধারিত
একবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন ফিংকেলস্টাইন। ১৯৫৩ সালে স্টালিনের মৃত্যুর কয়েকমাস পরই তিনি ছাড়া পান।
এর পর ষাটের দশক থেকে তিনি ব্রিটেনে বাস করছিলেন। এ বছরই তিনি মারা গেছেন।
ফিংকেলস্টাইন তার গুলাগ জীবনের কথা বলেছেন বিবিসির মার্ক ল্যানচিওনকে। ইতিহাসের সাক্ষীর এ পর্বটি পরিবেশন করছেন পুলক গুপ্ত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন