বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহতদের মোট সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রতি ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকায় বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার বাসার কাছে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
ক্ষমাপ্রার্থনার দাবির পাশাপাশি ওই অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করার এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা অস্বীকার বিষয়ে আইন করারও দাবি জানানো হয়েছে।তবে বিএনপি তাদের এধরনের দাবির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়া যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য কোনও মূল্য কী দলকে রাজনৈতিকভাবে দিতে হতে পারে?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক তারেক শামসুর রেহ্মান মনে করেন এই বিজয়ের মাসে মিসেস জিয়া এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এধরনের বক্তব্য কেন দিলেন সেটি বেশ বিভ্রান্তিকর।
তবে তিনি মনে করেন সঙ্গত কারণেই এই বক্তব্যের একটা রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, বাংলাদেশে সুশীল সমাজের যে অংশটি বিএনপির প্রতি দুর্বল তারা এই বক্তব্যে বিভ্রান্ত হতে পারেন।
``দেশে একটা প্রচেষ্টা রয়েছে ধীরে ধীরে ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার,`` তিনি বলেন, ``আমার কাছে মনে হয় তরুণ প্রজন্ম এই বক্তব্যে পর বিভ্রান্ত হতে পারে এবং তারা বিএনপির দিকে থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারে।``
বিএনপির বিরুদ্ধে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রচারের বিষয়টিকে উল্লেখ করে ড. রেহ্মান বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে বলা হয়ে থাকে যে তারা পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষা করে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের বক্তব্যকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান কী হতে পারে? তারেক শামসুর রেহ্মান মনে করেন বিএনপি এই দাবি উপেক্ষা করতে পারে।
তিনি বলেন, দলের তরফ থেকে বলা হতে পারে এটা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত মতামত, দলের নয়। আবার এটাও বলা হতে পারে যে তিনি যা বলেছেন সেটার অর্থ বিকৃত করা হয়েছে, এটা ওনার বক্তব্য নয়। এই ধরনের কথা শর্মিলা বোসের বইতেও রয়েছে।
``কিন্তু সিরাজুর রহমানের বক্তব্যই হোক, কিংবা শর্মিলা বসুর বক্তব্যই হোক,`` তিনি বলেন, ``তার বলা উচিত ছিল যেহেতু আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, আমার একটা রাজনৈতিক ম্যাচিওরিটি আছে। তাই এই বিজয়ের মাসে আমি এই বক্তব্য দেব না।``
বাংলাদেশের গভীর রাজনৈতিক বিভেদের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে মি. রেহ্মান বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে এই বক্তব্য যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত, তেমনি খালেদা জিয়া এটা বলেছেন বলেই তার বাড়ি ঘেরাও করা হবে, সেটাও কাম্য নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন