মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থ্যাকসগিভিং ডে হচ্ছে সবচেয়ে ব্যস্ত সময়গুলোর অন্যতম।
এসময় লক্ষ-লক্ষ মানুষ আমেরিকার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণ করে। এদের বেশিরভাগই বিমানে ভ্রমণ করে।কিন্তু অনেকের জন্য বিমান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা খুবই হতাশাজনক। এজন্য অনেকে অভিযোগ করেন। কিন্তু এর কারণ কী? সমস্যাটা কোথায়?
এশিয়ার অনেক বিমানবন্দরের তুলনায় আমেরিকার অনেক বিমানবন্দর এখন সেবা দেবার ক্ষেত্রে অনেকের তুলনায় পিছিয়ে আছে।
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দর পৃথিবীর ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোর অন্যতম। গত তিন বছর ধরে এই বিমানবন্দরটি পৃথিবীর অন্যতম সেরা বিমানবন্দরের স্থান দখল করে আছে।
এই বিমানবন্দরে অর্কিড এবং ক্যাকটাসের বাগান রয়েছে। হাতে সময় থাকলে যাত্রীরা চাইলে এখানে ঘুরে দেখতে পারেন।
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের পরেই দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেন বিমানবন্দর। এখানে আইস-স্কেটিং এবং গলফ ড্রাইভিং এর মতো ব্যবস্থা আছে। দীর্ঘ যাত্রা বিরতির যাত্রীদের জন্য এটি আদর্শ।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেনের পরেই হংকং এবং টোকিও বিশ্বর প্রথম পাঁচটি বিমানবন্দরের মধ্যে রয়েছে।
ইউরোপের মধ্যে একমাত্র জার্মানির মিউনিখ বিমানবন্দর উপরের সারিতে আছে।
আমেরিকার এক নম্বর বিমানবন্দর নর্দার্ন ক্যান্টাকি বিমানবন্দরের অবস্থান বিশ্বজুড়ে ৩০ নম্বরে রয়েছে।
বিশ্বের সেরা পঞ্চাশটি বিমানবন্দরের মধ্যে আমেরিকার বাকি যে দুটি বিমানবন্দর রয়েছে তার একটি সানফ্রানসিসকো এবং অপরটি আটলান্টা বিমানবন্দর।
‘আস্ক দ্য পাইলট ব্লগ’ নামের একটি ব্লগের একজন লেখক প্যাট্রিক স্মিথ মনে করেন আমেরিকায় বড় কয়েকটি বিমানবন্দরের কথা বাদ দিলে বাকি বিমানবন্দরগুলোর অবস্থা ভালো নয়।
কারণ এ বিমানবন্দরগুলোতে প্রচুর শব্দ, অপরিষ্কার এবং যাত্রী সেবার জন্য ভালো নয়।
মি: স্মিথ বলেন , “ আমাদের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তার অপ্রয়োজনীয় কড়াকড়ি। কানেকটিং ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়।”
যারা অন্য দেশ থেকে আমেরিকায় আসেন তাদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করতে অনেক সময় লাগে বলে মি: স্মিথ উল্লেখ করেন।
দ্য ইকনমিস্ট সাময়িকী বলছে ৭৩ শতাংশ আমেরিকান যারা তাদের দেশের বাইরে ভ্রমণ করেন, সেসব দেশের বিমানবন্দরগুলো আমেরিকার চেয়ে ভালো।
এক জরিপের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ পত্রিকা বলছে বিমানে ভ্রমণের জন্য আমেরিকা এবং কানাডার বিমানবন্দরগুলো সবচেয়ে ‘বিরক্তিকর।’
নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া বিমানবন্দর নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। এমনকি মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বিমানবন্দর সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন , “ মনে হয় এটা তৃতীয় বিশ্বের কোন বিমানবন্দর।”
নিউইয়র্ক শহরে আরো দু’টি প্রধান বিমানবন্দর আছে। একটি হচ্ছে নিউওয়ার্ক এবং অপরটি হচ্ছে জেএফকে। যাত্রীদের বিবেচনায় এই বিমানবন্দরগুলো ‘হতাশাজনক।’
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর হচ্ছে আমেরিকার আটলান্টা বিমানবন্দর।
কিন্তু এই বিমানবন্দরটি বড় হওয়ায় অনেকে এটি ঠিক মতো বুঝে উঠতে পারেন না। তাছাড়া বিমানবন্দরে সবসময় লোকে পরিপূর্ণ থাকে।
উত্তর আমেরিকার এয়ারপোর্ট কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রেসিডেন্ট কেভিন বার্ক স্বীকার করেন যে আমেরিকার বিমানবন্দরগুলোর ‘ইমেজ সমস্যা’ আছে।
তিনি বলেন, “ বিমান চলাচলে আমরা নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমাদের বিমানবন্দরগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ বিমানবন্দরগুলোর অন্যতম। কিন্তু অনেক বিমানবন্দর পুরনো হয়ে গেছে। এগুলো ব্যবস্থাপনা বেশ ব্যয়বহুল।”
আমেরিকার বিমানবন্দরগুলোর গড় নির্মাণ বয়স ৪০ বছর। অন্যদিকে এশিয়ার অধিকাংশ বিমানবন্দরগুলোর গড় বয়স ১৫ বছর।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন আমেরিকার বিমানবন্দরগুলো অবস্থান ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক রুটের মাঝখানে নয়।
পিছিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে সেটাও অন্যতম কারণ। দুবাই, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরের বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। সেজন্য তাদের আয় বেশি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন