বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, বিদেশি নাগরিক হত্যার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আইএস যে দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এখন তা খতিয়ে দেখছে।
ঢাকায় কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিকাব-এর এক অনুষ্ঠানে মিস বার্নিকাট বলেন, আইএস-এর উত্থান ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশেই রয়েছে।গত সপ্তাহে বাংলাদেশে ইতালি ও জাপানের দু'জন নাগরিককে হত্যার ঘটনার পর বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।
ওদিকে নিরাপত্তরা কারণ দেখিয়ে তৈরি-পোশাক শিল্পের বিদেশী ক্রেতারা আজ ঢাকায় তাদের একটি নির্ধারিত বৈঠকও স্থগিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বলেছেন, দুজন বিদেশী নাগরিককে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সহযোগিতা চাইলে যু্ক্তরাষ্ট্র সে জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে। বাংলাদেশের সরকার বলেছে, আইএস এর দাবির পক্ষে তথ্যপ্রমাণ এখনও মেলেনি।
তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিস বার্নিকাট বলছিলেন, “আইসিস এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী সংস্থা যে সকল দাবি করছে ,সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি এবং আমরা যদি এসব দাবির বিষয়ে নিশ্চত হতে পারি তবে আপনাদের সরকার এবং আমাদের সরকার কে জানাব।”
“সহিংস উগ্রপন্থা মোকাবেলায় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আমরা যৌথ প্রচেষ্টা নেবো। বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে আইএস-এর উত্থান মোকাবিলার জন্য যা করা প্রয়োজন, তা সবই আমাদের আছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন”, বলেন তিনি।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেছেন, সন্ত্রাস এবং উগ্রপন্থা দমনে বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা বিনিময় করে আসছে এবং অংশীদারিত্বের থেকে দু’দেশই অঙ্গীকার জোরালো করেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দুই দেশ একসাথে কাজ করবে বলেও তিনি মনে করেন।
গত ২৮শে সেপ্টেম্বর ঢাকায় কূটনীতিক এলাকায় ইতালির এক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতার পরামর্শ দেয়।
একই সাথে অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনও সতর্কতা পরামর্শ দিয়েছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, “আমরা সতর্কতার যে পরামর্শ দিয়েছি, তাতে আমরা বাংলাদেশে আসতে নিষেধও করিনি এবং নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ছেড়ে যেতেও বলিনি । আমাদের পরামর্শে যা বলে তা হলো ‘দয়া করে সতর্কতা মেনে চলুন’। আমরা বিশ্বাসযোগ্য তথ্যে ভিত্তিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণ বিষয়ক সতর্কতা আমরা হালনাগাদ করেছি। যাতে করে তারা আতঙ্কিত না হয়ে বরং আরো বিচক্ষণ হয়।”
ইতালির নাগরিককে হত্যার কয়েকদিন পর জাপানের নাগরিককে হত্যার ঘটনা বাংলাদেশে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং দাতা সংস্থাগুলোতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, পোশাক শিল্পে বিদেশী ক্রেতারা ঢাকায় তাদের সোমবারের নির্ধারিত বৈঠক স্থগিত করেছে। পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র নেতাদের অনেকে বলেছেন, নিরাপত্তা প্রশ্নে বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।
অস্ট্র্রেলিয়ার ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলও এখন ঢাকায় আসছে না।আগামী ১৫ই অক্টোবর তাদের ঢাকায় আসার কথা ছিল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, ৯ই অক্টোবর আইসিসির বৈঠকে তিনি যাচ্ছেন। সে সময় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলের ঢাকা সফরের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করে নতুন তারিখ নির্ধারণের চেষ্টা করবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন