মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী যুদ্ধে থাকব : খালেদা জিয়া

   
                 গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ সামনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফটো- বিএনপি অফিস
বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন যে বুধবারের পৌর নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।
তবে একি সাথে তিনি বলেছেন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকবে বিএনপি।
প্রায় দু মাসের লন্ডন সফর শেষে ঢাকায় ফিরে এমন সময়ে খালেদা জিয়া ঢাকায় এ সংবাদ সম্মেলন করলেন যখন প্রথম বারের মতো দলীয় ভিত্তিতে ২৩৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আর মাত্র বাকী একদিন।
গত কয়েকদিন ধরেই বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা নির্বাচনে নানা অনিয়ম, দলীয় প্রার্থীদের উপর হামলাসহ সহ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছিলেন, দলটির চেয়ারপার্সনের আজকের বক্তব্যে মূলত সেটিই উঠে এসে।
কোন আলোচনা ছাড়াই দলীয় ভিত্তিতে পৌর নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়ার সমালোচনা করে তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি দাবি করে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “আসন্ন পৌর নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। বিরোধী দলে অফিস ও প্রার্থীদের ওপর হামলা, প্রচারণায় বাধা দেয়া দেয়া, ভয় ভীতি প্রদর্শন চরম আকার ধারণ করেছে। সন্ত্রাসী ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণীর সদস্যকে ব্যবহার করা হচ্ছে”।
তার অভিযোগ সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার করছে, সশস্ত্র হামলা করছে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। ভোট কেন্দ্র দখলেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
                 ভোটের প্রচারণায় পৌর নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত একজন প্রার্থীর। সোমবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হচ্ছে নির্বাচনের প্রচারের কাজ।                 
দীর্ঘ লিখিত বক্তৃতায় খালেদা জিয়া তার দলের প্রার্থী, প্রার্থীদের সম্ভাব্য এজেন্ট ও সমর্থকদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেয়ার অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়া পৌরসভা নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে সেনাবাহিনী মোতায়েনের মতো কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
"আমরা জানি না, আর কত ভয়াবহ অবস্থা হলে নির্বাচন কমিশন সেনা মোতায়েনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করবেন।"
তিনি বলেন সরকার নির্বাচনে প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে কোন পরিস্থিতিতেই বিএনপির নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনা যেটি সরকারি দলের নেতারা গত কয়েকদিন ধরে বলছিলেন তা নাকচ করে দেন তিনি।
তিনি বলেন,” নির্বাচনকে তারা হোন্ডা, ডাণ্ডা আর গুণ্ডার নির্বাচনে পরিণত করেছে। আপনারা সবাই মিলের দলে দলে ভোট কেন্দ্রে হাজির হয়ে সর্বশক্তি দিয়ে নিজেদের ভোটের মর্যাদা রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা করবেন”।
খালেদা জিয়া বলেন, " জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তি কোন স্বৈরশাসকের অসৎ উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট। আমরাও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী যুদ্ধে অবিচল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি"।
বিএনপি চেয়ারপার্সন নির্বাচনে শাসক দলের প্রভাব বিস্তারের চেস্টার অভিযোগ তুলে তা রুখে দেয়ার জন্যে ভোটার বিশেষ করে তার সমর্থকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
                 ২৩৪টি পৌরসভায় ভোট হবে বুধবার।
পৌর নির্বাচনে ভোটারদের সর্বশক্তি দিয়ে ভোটের মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিরোধীদল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ''যারা আপনাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, যারা আপনাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অপকৌশলে সরিয়ে দিয়েছে, তাদের ভোট চাইবার কোনো অধিকার নেই”।
বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতার সঙ্কটের প্রতি ইঙ্গিত করে মিসেস জিয়া বলেন, সরকার দলীয় ভিত্তিতে পৌর মেয়র নির্বাচন করার ব্যবস্থা সেই সংকট থেকে উত্তরণের দুরাশা নিয়ে।
''তারা এই নির্বাচনে সকল রকম অনিয়মের মাধ্যমে ফলাফল পাল্টে দিয়ে দেশবাসী এবং পৃথিবীকে দেখাতে চায় যে, তাদেরও জনপ্রিয়তা আছে।''
এদিকে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিক ভাবে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি।
তবে আজই দুপুরে কমিশনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বিএনপির গত কিছুদিন ধরে নির্বাচন নিয়ে যেসব অভিযোগ করছে সেগুলোকে গতানুগতিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যদিও তিনি বলেছেন কোন অভিযোগের সত্যতা পেলে কমিশন সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন