শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫

মাদ্রাসাতে ঘটা যৌন নির্যাতন ফাঁস করে বিপাকে

 
    vp_rajeena_profile_pic                 সাংবাদিক ভি পি রাজিনা      
           
ভারতের কেরালা-তে একটি মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীদের ওপর কীভাবে যৌন নির্যাতন চালানো হত, সে ব্যাপারে তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বিবরণ ফেসবুকে পোস্ট করার পর অনলাইনে তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছেন এক মহিলা সাংবাদিক।
ভি পি রাজিনা নামে ওই মহিলা সাংবাদিক কাজ করেন স্থানীয় জামাতে ইসলামীর মালয়লাম দৈনিক মধ্যমাম পত্রিকাতে।
দুদিন আগে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক ওয়ালে তিনি বর্ণনা করেন, প্রায় দুদশক আগে নিজের মাদ্রাসা জীবনে কীভাবে তিনি ‘ওস্তাদ’দের (মাদ্রাসা শিক্ষক) হাতে শিক্ষার্থীদের নির্যাতিত হতে দেখেছেন।
কেরালার কোঝিকোড়ের একটি মুসলিম সংস্থার পরিচালিত কলেজে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের আলাদা করা নিয়ে রাজ্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে, সেই পটভূমিতেই তিনি ওই পোস্টটি করেছিলেন।
ভি পি রাজিনা লিখেছেন, মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম দিনেই তিনি দেখেন ক্লাসের ওস্তাদ, একজন 'মোটাসোটা মধ্যবয়সী লোক', সব ছেলেদের সার বেঁধে দাঁড় করিয়ে একে একে তার চেয়ারের সামনে ডেকে আনছেন।
তারপর তিনি ওই ছেলেদের প্রত্যেকের প্যান্টের চেন খুলে অশালীনভাবে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করতে থাকেন।
চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় মাদ্রাসার আর একজন ওস্তাদ রাতের ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের ওপরে যৌন নির্যাতন চালাতেন বলেও ওই সাংবাদিক অভিযোগ করেছেন।
ভি পি রাজিনা জানাচ্ছেন, যখনই বিদ্যুৎ চলে যেত, ষাট বছর বয়সী একজন ওস্তাদ মেয়েদের বেঞ্চের দিকে এগিয়ে এসে অন্ধকারে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ খামচে ধরতেন কিংবা লাঠি দিয়ে তাদের গায়ে খোঁচা দিতেন।
একবার এক সিনিয়র ছাত্রী ওই ওস্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিলেন এবং হুমকি দিয়েছিলেন মাদ্রামার প্রধান শিক্ষকের কাছে তিনি সব ফাঁস করে দেবেন।
কিন্তু ভি পি রাজিনা ফেসবুকে এই পোস্ট করার পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে শত শত আক্রমণাত্মক মন্তব্য ধেয়ে আসতে থাকে – তার ফেসবুক পেজে অনেকেই তাকে সরাসরি হুমকি দিতে থাকেন।
বুধবার একটা পর্যায়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দুদুবার সাসপেন্ড করে দেওয়া হয় – কারণ তার বিরুদ্ধে অশ্লীল পোস্ট করার অভিযোগ রিপোর্ট করা হয়েছিল।
এখন অবশ্য সেই অ্যাকাউন্ট আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মিস রাজিনা একটি জাতীয় টিভি চ্যানেলকে বলেছেন কোনও হুমকিতে তিনি ভীত নন, কারণ তিনি জানেন আল্লা তার পক্ষে আছেন।
ওই সাংবাদিক আরও বলেছেন, ‘‘আমার লড়াই কোনও বিশেষ ধর্ম বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। আমি নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছি, আমাদের মতো অন্য শিশুদেরও যাতে নীরবে এই নির্যাতন সহ্য করে যেতে না-হয় সে জন্যই আমি মুখ খুলেছি।’’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন