বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫

অশ্লীল বই ধরে ফেলায় ছাত্রদের বেদম মার মাদ্রাসা শিক্ষককে

 
    পড়ার বইয়ের আড়ালে লুকিয়ে অশ্লীল বই পড়তে গিয়ে শিক্ষকের কাছে ধরা পড়ে যায় দুজন ছাত্র।      
          
সন্ধ্যাবেলায় পড়ার বইয়ের আড়ালে অশ্লীল বই পড়ছিল আবাসিক মাদ্রাসার দুজন ছাত্র। এক শিক্ষক সেটা
 দেখে ফেলেন। তারই বদলা নিতে মাঝরাতে প্রায় ৪০ জন ছাত্র সেই শিক্ষককে রড, উইকেট,লাঠি দিয়ে ব্যাপক মেরেছে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়।
খানাকুল এলাকার মাইনান নাবাবীয়া মিশন হাই মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর এক আবাসিক ছাত্র পড়ার বইয়ের আড়ালে অশ্লীল বই পড়ছিল আর সেটা দেখে ফেলেন শিক্ষক মৈনাক সরকার।
আবাসিক মাদ্রাসার অফিসে সেই অশ্লীল বইটি জমা দিয়ে দেন তিনি আর ছাত্রদের অভিভাবককে ডেকে পাঠায় কর্তৃপক্ষ।
মিঃ সরকার বিবিসি বাংলাকে বলেন, “পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি শেষ করে ঘুমোতে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিলাম। রাত বারোটার দিকে দশম শ্রেণীর প্রায় জনা চল্লিশেক ছাত্র মুখে গামছা বেঁধে আমাকে স্টাফ রুমে টেনে নিয়ে যায়। তারপরেই রড, লাঠি, উইকেট দিয়ে মারতে থাকে ওরা। কোনওমতে চেয়ারের নিচে মাথাটা ঢুকিয়ে বেঁচেছি, না হলে হয়তো মেরেই ফেলত।“
ছাত্রদের এই কান্ডের জেরে মিঃ সরকার বলছেন তার কলার বোন ভেঙ্গে গেছে, পুরো ডান হাতে রক্ত জমাট বেঁধে আছে, পিঠে, তলপেটে আর ঘাড়ে অসহ্য ব্যথা।
হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
যে ছাত্ররা মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত, তাদের কয়েকজনকে আগেও অশ্লীল বই পড়তে গিয়ে ধরেছেন মি. সরকার। কিন্তু তিনি বলছেন কিছু ধমক দিয়ে এর আগে প্রতিবারই ছাত্রদের ছেড়ে দিয়েছেন তিনি তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে।
মিঃ সরকার বিবিসি বাংলাকে বলেছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করবে বলে তাকে জানিয়েছে।
খানাকুলের এই হাই মাদ্রাসাটিতে সরকারি মাদ্রাসা পাঠ্যক্রম পড়ানো হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের অনেক রাজ্যেই সরকারি বোর্ডের মাদ্রাসায় সাধারণ স্কুলের পাঠ্যক্রমের মতোই ইংরেজি, বিজ্ঞান বা কম্পিউটারের মতো বিষয় পড়ানো হয়, সঙ্গে বাড়তি থাকে আরবী ও ইসলামিক ধর্ম শিক্ষা – এই দুটি বিষয়। পশ্চিমবঙ্গের সরকার স্বীকৃত মাদ্রাসাগুলিতে হিন্দু শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী থাকেন, কয়েকটি মাদ্রাসায় আবার হিন্দু শিক্ষার্থীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন