শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৫

বঙ্গবন্ধু উপগ্রহের ৮৫% অর্থ দেবে ফ্রান্সের থেলিস

 
bd-sat

 দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১-এর মূল কার্যক্রম স্যাটেলাইট সিস্টেম ক্রয়ে ৮৫ শতাংশ অর্থায়ন করবে ফ্রান্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান থেলিস অ্যালেনিয়া স্পেস। সেই লক্ষ্যে তাদের সাথে চুক্তি করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ১১ নভেম্বর এ চুক্তি সম্পন্ন হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্যাটেলাইট সিস্টেম নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৫১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে নির্মাণকাজের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান বহন করবে ৮৫ শতাংশ ব্যয়। বাকি অর্থ দেবে সরকার। গত ২০ অক্টোবর সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি স্যাটেলাইট সিস্টেম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করে। টার্ন-কি পদ্ধতিতে এটি কেনা হচ্ছে। এর আগে প্রকল্পের দুটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে; যার একটি স্লট ক্রয় ও অন্যটি পরামর্শক নিয়োগ।
ইউরোপের শীর্ষ স্যাটেলাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেলিস অ্যালেনিয়া স্পেস ফ্রান্স ও ইতালির যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত। থেলিসের প্রধান কার্যালয় ফ্রান্সের কানে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে কক্ষপথের স্লট বরাদ্দ নিতে রাশিয়ার প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুটনিকের সঙ্গে চুক্তি করে বিটিআরসি। চুক্তি অনুযায়ী ইন্টারস্পুটনিককে স্লট বরাদ্দের জন্য ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার দিতে হচ্ছে।

স্যাটেলাইট নির্মাণ ও উৎক্ষেপণে গত ২৪ মার্চ দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে ন্যূনতম ১০টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বা সম্ভাব্য উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারিত রয়েছে, এমন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে। নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইটের মূল অংশ তৈরি, উৎক্ষেপণ, গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণ ও বীমা নিশ্চিতে কাজ করবে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্যাটেলাইট তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করে চারটি প্রতিষ্ঠান— কানাডার এমডিএ করপোরেশন, ফ্রান্সের থেলিস অ্যালেনিয়া স্পেস, যুক্তরাষ্ট্রের অরবিটাল সায়েন্সেস করপোরেশন ও চীনের চায়না গ্রেট ওয়াল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন (সিজিডব্লিউআইসি)।
ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বাকি ১ হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে বিদেশী উত্স থেকে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর পাঁচ বছরের মধ্যে এ প্রকল্পের ব্যয় উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে পরামর্শক সেবা গ্রহণের জন্য ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ‘প্রিপারেটরি ফাংশন অ্যান্ড সুপারভিশন ইন লঞ্চিং আ কমিউনিকেশন অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং স্যাটেলাইট’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিটিআরসিকে দায়িত্ব দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি শেষে স্যাটেলাইট নির্মাণকাজ তদারকিতে সম্প্রতি নতুন প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এটি নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর।

বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণে মূল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল (এসপিআই)। বাজার মূল্যায়ন, বাজারজাতকরণ, কাঠামো তৈরি, স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ, গ্রাউন্ড স্টেশন ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের প্রথম স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া যাবে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার; যার ২৬টি কেইউ ব্যান্ডের ও ১৪টি সি ব্যান্ডের। এসব ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২০টি ব্যবহার করবে বাংলাদেশ। বাকিগুলো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভাড়া দেয়া হবে।
প্রথমবার্তা ডেস্ক :
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন