বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৫

বৈরুতের যে লোক নিজের জীবন দিয়ে অনেককে বাঁচালেন

 
    আদেল টেরমসের মরদেহ গত শুক্রবার সম্মানের সাথে দক্ষিণ লেবাননে তাঁর গ্রাম তালুসা-য় কবর দেয়া হয়।      
          
গত বৃহস্পতিবার, প্যারিস আক্রমণের এক দিন আগে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীতে দুটি আত্মঘাতী হামলায় ৪১জন নিহত এবং ২০০জন আহত হন।
কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ বাঁচিয়ে দেন অনেক জীবন।
আদেল টেরমস তাঁর বাচ্চা মেয়েকে নিয়ে বাজার করতে বের হয়েছিলেন, যখন তিনি একটি বিস্ফোরণের আওয়াজ পান।
তিনি হঠাৎ দেখতে পান একজন লোক আত্মঘাতী বোমারুদের মত বিস্ফোরক বেল্ট পরে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে।
আদেল টেরমস লোকটির উপর ঝাঁপিয়ে পরে তাকে মাটিতে ফেলে দেন। কিন্তু তখন আত্মঘাতী বোমারুর বেল্ট বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণে ৩২-বছর বয়স্ক আদেল টেরমস মারা যান, কিন্তু তিনি বাঁচিয়ে দেন তাঁর মেয়েসহ আরো অনেক পথচারীর জীবন।
                
ইরাক এবং সিরিয়া-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।
বৈরুতের যে এলাকায় আক্রমণটি হয়, সেই বুর্জ আল-বারাজনেহ-কে লেবানিস রাজনৈতিক গোষ্ঠী হেজবোল্লাহ-র শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ধারণা করা হয়।
হেজবোল্লাহ-র সামরিক বিভাগ প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াতে ইসলামিক স্টেট-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
আদেল টেরমসের আত্মত্যাগের খবর স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় পরের দিনই প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু বহির্বিশ্বের গণমাধ্যম প্যারিস হামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আদেল টেরমস-এর খবর কয়েক দিন পরে প্রকাশ পায়।
“অনেক পরিবার, শত শত মানুষ হয়তো, জীবিত আছেন তাঁর আত্মত্যাগের কারণে”, লেবানিস ডাক্তার এবং ব্লগার এলি ফারেস আমেরিকার রেডিও স্টেশন পিআরআই-কে বলেন।
মি: ফারেস তাঁর ব্লগে আদেল টেরমস সম্পর্কে লেখেন, যেটা দিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্যারিস এবং বৈরুতে হামালার ঘটনা নিয়ে ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
“যখন আমার দেশের মানুষ মারা যান, তখন অন্য কোন দেশ তাদের স্থাপনাগুলো আমার দেশের পতাকার রং-এ সাজায় না”, তিনি অভিযোগ করেন।
আদেল টেরমসের মরদেহ গত শুক্রবার সম্মানের সাথে দক্ষিণ লেবাননে তাঁর গ্রাম তালুসা-য় কবর দেয়া হয়।
মি: টেরমস-এর কফিন হেজবোল্লাহ-র পতাকায় মুড়ে দেয়া হয়। জানাজার আগে কফিন গ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারী লোকজন শ্লোগান দেয়। bbc

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন