বাংলাদেশের প্রধান বিমানবন্দর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সহ দেশটির সব বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিবিসিকে বলেছেন, বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে স্বরাষ্ট্র ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এক বৈঠকে নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হয়।কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে। এর অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের মূল টার্মিনাল ভবনে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া, বাড়তি তল্লাশীর মুখোমুখি হচ্ছেন যাত্রীরাও।
গতরাত থেকে এই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশ বলছে নাশকতার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বছরে প্রায় ৫০ লক্ষ যাত্রী বাংলাদেশের এই প্রধান বিমানবন্দরটি ব্যবহার করেন, যার মধ্যে ৪০ লক্ষই আন্তর্জাতিক গন্তব্যের যাত্রী। আর এর মধ্যে রয়েছেন বিদেশী যাত্রীরাও।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলছেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে –
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিদেশী নাগরিক হত্যা এবং ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের মূল কেন্দ্র হোসাইনী দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলছেন, বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তাঁর ও বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের মধ্যে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে মি. কামাল জানান।
অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলছেন, দু’জন ভিনদেশী নাগরিক হত্যার পর বিশেষ করে বিদেশীদের মধ্যে একধরণের নিরাপত্তাহীনতার বোধ তৈরী হয়েছে। শিয়া স্থাপনায় হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। আর এরপর ঢাকায় কয়েকটি পশ্চিমা দেশের দূতাবাস তাদের নাগরিকদের চলাচলে সতর্ক হতে আবারো নির্দেশনা দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, সার্বিকভাবেই সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে, তবে বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাগুলো কতদিন বজায় থাকবে, সে ব্যাপারে কর্মকর্তারা ঠিক নিশ্চিত নন।
ঢাকায় পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, সব কিছুই নির্ভর করবে গোয়েন্দা তথ্যের ওপর।
কয়েক সপ্তাহ আগে শাহজালাল বিমানবন্দরে বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটে বোর্ডিং পাস ছাড়াই একজন নারী উঠে পড়ে।
বিমান উড্ডয়নের ঠিক আগ মুহূর্তে বিষয়টি নজরে আসে এবং সেই নারীকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
জ্ঞিজাসাবাদের পর সেই নারীকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
তবে সেই ঘটনার পরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন