ভারতে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং গ্রুপ এ-তে ধরমশালায় কাল (শুক্রবার) রাতে বাংলাদেশ মুখোমুখি হচ্ছে আয়ার্ল্যান্ডের।
প্রথম ম্যাচে দুর্বল ওমানের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে গিয়ে এই ম্যাচের আগে আইরিশরা যেমন চাপে, তেমনি বাংলাদেশর দুজন বোলারের অ্যাকশন নিয়ে আইসিসি প্রশ্ন তোলার পর বাংলাদেশও অন্যরকম চাপের মুখে পড়ে গেছে।
তবে এ ম্যাচে জিততে পারলে বাংলাদেশের সুপার টেনে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে – অন্যদিকে হারলে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে পড়বে আয়ারল্যান্ড।
তবে ধরমশালায় কাল রাতে বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে – এবং সে ক্ষেত্রে পয়েন্ট ভাগাভাগির সম্ভাবনা ম্যাচের আগে দু'দলকেই দুশ্চিন্তায় রেখেছে।
তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরও শুক্রবারের ম্যাচে এরা দুজনেই প্রথম এগারোতে থাকবেন বলে বাংলাদেশ দল সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।
তার একটা কারণ যদি হয় বাংলাদেশ মনে করছে এদের অ্যাকশন নিয়ে কোনও সমস্যা নেই – তাহলে আর একটা বড় কারণ হল মুস্তাফিজুর রহমানের আঘাত এখনও পুরোপুরি সারেনি।
প্রায় চারদিন হতে চললো ধরমশালায় পা রেখেছে বাংলাদেশ – কিন্তু দলের বোলিংয়ে প্রধান চমক মুস্তাফিজুর এখনও প্র্যাকটিসেই নামতে পারেননি।
এদিকে তাসকিন ও আরাফাতকে নিয়ে নতুন উদ্বেগ এসে ভর করলেও বাংলাদেশের কোচ চন্দিকা হাতুরাসিঙ্ঘে অবশ্য দাবি করলেন দলের বোলারদের নিয়ে তিনি ভাবছেন না – বরং তার দুশ্চিন্তা দলের ব্যাটিং নিয়ে।
"আমাদের বোলাররা কিন্তু গত বেশ কয়েক মাস ধরেই দারুণ করছে, যদিও কিছুটা চিন্তা আছে ব্যাটসম্যানদের নিয়ে। আমি বারবারই বলছি, আমাদের ব্যাটাররা যদি একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারে তাহলে এই মাঠে বড় রান করা সম্ভব। প্রথমে ব্যাট করে ওরা যদি সেটা করে দেখাতে পারে তাহলে কিন্তু আমরা প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে দিতে পারব – কারণ বোলিংটাই আমাদের প্রধান শক্তি"।
"ম্যাচে যারা গোড়াতে বিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারবে, এগিয়ে থাকবে তারাই। আয়ারল্যান্ড যদিও প্রায় দিন দশেক আগেই এখানে পৌঁছে গেছে, তার পরেও আমি বলবো আলাদা করে কোনও দলই বাড়তি অ্যাডভান্টেজ নিয়ে শুরু করবে না"।
আয়ারল্যান্ড অবশ্য অ্যাডভান্টেজ দূরস্থান, রীতিমতো কোণঠাসা অবস্থা থেকে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবে সেই মরিয়া চেষ্টাতেই ব্যস্ত।
প্রথম ম্যাচেই অনভিজ্ঞ ওমানের বিরুদ্ধে দুই উইকেটে পরাজয়ে বিশ্বকাপে দলের সম্ভাবনা বিরাট হোঁচট খেয়েছে, আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হারলেই তাদের টুর্নামেন্ট একরকম শেষ হয়ে যাবে।
তবে আইরিশ সহ-অধিনায়ক গেরি উইলসন বলছিলেন এরকম চাপের মুখেই তাদের সেরাটা বের হয়ে আসে এবং এমন নয় যে তাদের বাংলাদেশকে আগে হারানোর অভিজ্ঞতা নেই।
গেরি উইলসন বলেন, "২০০৯ সালের টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপেই কিন্তু আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিতেছিলাম। তারও বেশ কয়েক বছর আগে ইংল্যান্ডের মাটিতেও আমরা ওদের হারিয়েছি। বাংলাদেশ অবশ্যই দল হিসেবে দারুণ উন্নতি করেছে, কিন্তু বিশ্বকাপ বা ওরকম বড় আসরে আমাদেরও অনেক অঘটন ঘটানোর ইতিহাস আছে। তা ছাড়া যখনই দেখেছি আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই দলের বেশ কিছু ক্রিকেটার রুখে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে"।
"গতকাল আমরা সত্যিই ভাল খেলিনি। শিশির পড়েছিল বা ওই জাতীয় অন্য কোনও অজুহাত দেব না। কিন্তু সামনে আমাদের অন্য লড়াই। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমাদের নিজেদের প্রমাণ করতেই হবে"-বলেন গেরি উইলসন।
আয়ারল্যান্ডের এই একরোখা, কিছুই হারানোর নেই মানসিকতাটা যদি বাংলাদেশের জন্য সমস্যার কারণ হয় তাহলে আর একটা সমস্যা হলো রাতে ধরমশালাতে বৃষ্টির সম্ভাবনা।
কোনও কারণে ওই ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে দু'দলের মধ্যে।
আর তার আগে বিকেলের ম্যাচে ওমান যদি নেদারল্যান্ডসকে হারাতে পারে তাহলে এই গ্রুপ থেকে পরের পর্বে যাওয়ার অঙ্কটা ভীষণই জটিল হয়ে পড়বে।
তার মানে শুধু তাসকিন-আরাফাত ঘটিত সমস্যাই নয়, পাহাড়ি এই শহরে আকাশের মেজাজমর্জিও বাংলাদেশ দলের কপালে ভাঁজ ফেলছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন