বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বাংলাদেশে স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর সরকার চাপ সৃষ্টি করছে: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল


সরকার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়েও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওপর খবরদারি করছে বলে অ্যামনেস্টি উল্লেখ করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলেছে, দেশটিতে সরকারের সমালোচনা করছে এমন স্বাধীন গণমাধ্যমগুলো এখন মারাত্মক চাপে রয়েছে।
এর উদাহরণ হিসেবে তারা বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদপত্র প্রথম আলো এবং দ্য ডেইলি স্টারের উদাহরণ এনে বলছে, সরকার বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে এ দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দেয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, তারা মনে করছেন এধরণের অভিযোগ একপেশে এবং বাস্তবসম্মত নয়।
“অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে যদি কোন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা তারা প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু সেটি না করে হাওয়ার ওপরে ভিত্তি করে তারা বলছেন যে এই কোম্পানিগুলোকে নিষেধ করা হয়েছে।”

Image captionতবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, তারা মনে করছেন এধরণের অভিযোগ একপেশে এবং বাস্তবসম্মত নয়।

মি. চৌধুরী বলেন, পত্রিকাগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করার কোন তথ্য তাদের কাছে নেই।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলাম ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের উপ সম্পাদক ইনাম আহমেদের সাথে। তিনি বলছেন, বিজ্ঞাপন না দেয়ার বিষয়ে কোন চাপ আছে কিনা সেটি তাদের জানা নেই, তবে গত প্রায় ৬ মাস যাবত তাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে।
“আমরা দেখছি গত অগাস্টের মাঝামাঝি থেকে আমাদের বিজ্ঞাপন হঠাৎ করে খুব কমে গেছে। বিজ্ঞাপন প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। চারটি বড় টেলিকম প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন উধাও হয়ে গেছে। কিন্তু কেন হয়েছে এটা এখনো আমরা জানি না।” বলেন মি. আহমেদ।
বিজ্ঞাপন দেয়ার বিষয়ে সরকারের কোন চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে এনিয়ে কোন মন্তব্য করেনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা।

Image copyrightAFP
Image captionবিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রেখে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপরও বাঁধার সৃষ্টি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদপত্রের ওপর চাপের পাশাপাশি ২০১৫ সালের একটি সময় জুড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রেখে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপরও বাঁধার সৃষ্টি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে। বাংলাদেশ সরকার এর কারণ হিসেবে বলেছে নিরাপত্তার কথা।
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব সক্রিয় একজন তরুণ লেখক, আশিফ এন্তাজ রবি বলছেন, যে অজুহাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হোক না কেন, তাতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাহত হয়।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখা সম্পর্কে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বক্তব্য নাকচ করছে সরকার।
সরকার বলছে, শুধুমাত্র নিরাপত্তা জনিত কারণেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ম্যাসেজিং অ্যাপগুলো বন্ধ করা হয়েছিলে এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটি আবার খুলে দেয়া হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন