বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬

ভারতে ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের পর নির্যাতিতার আত্মহত্যা

Image copyrightThinkstock
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে এক মধ্যবয়সী নারীকে গণধর্ষণ করে সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার পর ওই নারী আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে তার স্বামী জানিয়েছেন, রবিবার রাতে তাকে গণধর্ষণ করা হয় আর মঙ্গলবার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের গ্রামে। বিকেলে ওই নারী বিষপান করেন।
মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও গত দুদিন ধরে ধৃতদের কঠোরতম শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবীতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকার মানুষ।
উত্তর প্রদেশের মুজফফরনগরের ছাপড়া গ্রামের বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী ওই নারী একজন গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহায়িকা।
তাঁকে রবিবার রাতে গ্রামেরই এক ব্যক্তি ডেকে নিয়ে যান এক আত্মীয়ার প্রসবের সময়ে। তাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার নাম করে ওই ব্যক্তি এবং তার আরও তিনসঙ্গী গণ ধর্ষণ করে এবং গোটা ঘটনার ভিডিও করে রাখে।
মূল অভিযুক্ত মঙ্গলবার ওই ভিডিওটি গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় নির্যাতিতাকে। বিকেলে মধ্যেই সেটি সত্যিই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জানার পরে আত্মহত্যা করেন ওই নারী।
মুজফফরনগরের শহরাঞ্চলীয় পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট প্রদীপ গুপ্তা টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় যেটা অপরাধ, সেটাই করা হয়েছে ওই ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে। দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি আইনেও অভিযোগ জমা নেওয়া হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সাহিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উত্তরাখণ্ড রাজ্য থেকে। বাকি তিন অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।
এই ঘটনা সামনে আসার পরে সেখানে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। দুদিন ধরে জাতীয় মহাসড়ক অবরোধও করা হয়েছিল। স্থানীয় মানুষরা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারী, কঠোর শাস্তি, নির্যাতিতার স্বামী সরকারী চাকরী প্রভৃতি দাবী তুলেছেন। পুলিশ সুপার বলছেন, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে
মি. গুপ্তা বলছেন, "এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। ময়না তদন্ত হয়ে গেছে, মৃতার সৎকারও হয়ে গেছে, মূল অভিযুক্তও ধরা পড়েছে। তাই এখন উত্তেজনা প্রায় নেই। ওই গ্রামে কিছু পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। তবে উত্তেজনা তো গ্রামের মানুষ তৈরি করেন নি, উস্কানি দেওয়া হয়েছিল।"
ভারতে ভিডিও ক্যামেরাসহ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার গ্রাম গঞ্জে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বেশ কয়েকবছর ধরে। একই সঙ্গে বাড়ছে ওই ধরণের ফোন ব্যবহার করে অপরাধও।
ধর্ষণকারীরা অনেক ক্ষেত্রেই ওই অত্যাচারের ঘটনা মোবাইলে রেকর্ড করে রাখছে। কখনও ব্ল্যাকমেইল করার জন্য অথবা পুলিশের কাছে অভিযোগ না জানানোর হুমকি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ওই ভিডিও ক্লিপিং।
তবে হোয়াটস্অ্যাপ বা এমএমএসের মাধ্যমে সত্যিই তা ছড়িয়ে দিয়ে ধর্ষিতার ওপরে আবারও নির্যাতনের মতো পাশবিক ঘটনাও সামনে আসছে মাঝে মাঝেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন