বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৬

স্কুলে বেতন বৃদ্ধি: অভিভাবক ও কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ

Image captionঅভিবাবকদের অভিযোগ, অস্বাভাবিকভাবে নামী বেসরকারি স্কুলগুলোয় বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে
বাংলাদেশের ঢাকা ও চট্টগ্রামের অনেকগুলো নামী বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের চলতি বছরের শুরুতে বেতন ও ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন অভিভাবকরা। তারা বলছে বেতন স্কেলের দোহাই দিয়ে ফি বৃদ্ধি তারা মেনে নেবেন না।
স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে নতুন বেতন স্কেল ঘোষণার পর তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানোর জন্য ফি বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর জানিয়েছে, নীতিমালা না মেনে ভর্তি ফি ও বেতন বাড়ানোর অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে ঢাকার সুপরিচিত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল ও কলেজকে।
তবে শুধু এ স্কুলটিই নয়, বছরের শুরুতেই ফি ও বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে ঢাকার প্রায় সব নামী বেসরকারি স্কুল। আর এর বিরুদ্ধে এখন আন্দোলনে নেমেছেন অভিভাবকরা। পালন করছেন নানা কর্মসূচি।
একজন অভিভাবক বলেন আমার মেয়ে স্ট্যান্ডার্ড সিক্স এ পড়ে। গত বছরের তুলনায় এবার ২/৩ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে।
আরেকজন বলেন তার দুই সন্তান নার্সারিতে পড়ে, তাদের বেতন ১৫শ থেকে ২৫শ করা হয়েছে।
Image copyrightGetty
Image captionকর্তৃপক্ষ বলছে, এভাবে বেতন বৃদ্ধির সুযোগ নেই
তবে অভিভাবকদের এসব বক্তব্যের জবাবে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন বলছেন, ৩৯৮ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা, যারা এমপিও ভুক্ত নন বলে সরকারি অর্থ পাননা, তাদের বেতন ভাতা যোগাতেই ৪৯শতাংশ ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তার মতে এটি আরও বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল।
অন্যদিকে ভিকারুননিসা স্কুলের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক সুদীপ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, সরকার নতুন বেতন স্কেল দিয়েছে বলে সবার ওপর অতিরিক্ত বেতন চাপিয়ে দেয়াটা অন্যায়।
তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজী হননি স্কুলের অধ্যক্ষ সুফিয়া খাতুন। তার ব্যক্তিগত সহকারী জানিয়েছেন বেতন ভাতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ওদিকে ঢাকার স্কুল গুলোর মতো বেতন বা ফি বাড়ানো হয়েছে চট্টগ্রামের স্কুলগুলোতেও। সেখানকার সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত একটি স্কুলের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিখা রানী বলছেন সেখানে ফি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
তিনি জানান তার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ৭৫ টাকার বেতন ১৫০ টাকা এবং ভর্তি ফি ১৬শ টাকার জায়গায় করা হয়েছে ২৬শ টাকা।
অভিভাবকদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম চট্টগ্রামে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্কুলগুলোর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা নাজিয়া শিরিনের কাছে।
তিনি বলেন সব পর্যালোচনা করে শিক্ষার গুনগত মান বাড়াতে বেতন একটু বাড়ানো হয়েছে।
তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন বলছেন, সরকারি নির্দেশনার বাইরে গিয়ে এভাবে বেতন ভাতা বৃদ্ধির কোন সুযোগ নেই। যারা এগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, উইলস লিটল ফ্লাওয়ারকে শোকজ করা হয়েছে, ভিকারুননিসা স্কুলও পরিদর্শন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তারা যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তাতে করে কোন স্কুলই নীতিমালার বাইরে গিয়ে বেশি ফি আদায় করতে পারবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন