মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন কোথায়?

 
                     বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী রবিবারই এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ঢাকা ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি এখন মূল্যায়ন করছে।    
            
পাকিস্তানের সাথে এখন বাংলাদেশের সম্পর্কে বেশ ভাটা চলছে।
বাংলাদেশে সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধের দায়ে দুজন শীর্ষস্থানীয় বিরোধী রাজনীতিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের অবস্থান এবং ঢাকা ও ইসলামাবাদে দুই দেশের কূটনীতিবিদদের তলব পাল্টা তলবকে কেন্দ্র করে এখন দু'দেশের সম্পর্কে বেশ তিক্ততা তৈরি হয়েছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন তরফ থেকে দাবি তোলা হচ্ছে, এই সুযোগে বাংলাদেশের উচিৎ পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে তাদের তরফ থেকে পাকিস্তানের সাথে আর কোনও সম্পর্ক রাখা হবে না।
এরকম প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী রবিবারই এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ঢাকা ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি এখন মূল্যায়ন করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য আসলেই কি কোনও সত্যিকারের অর্থ বহন করে, নাকি কথার কথা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুর রব খান।
এই বক্তব্য অবশ্য দু'দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতিকে স্বীকৃতি দেয় বলেই মনে করেন ড. খান।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কের কতটা অবনতি হয়েছে? সেটা কি সম্পর্কচ্ছেদ করবার মতো?
এর আগেও এরকম তিক্ততা এসেছে দু'দেশের মধ্যে উল্লেখ করে ড. খান বলছেন, “স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তানের সাথে মধুর সম্পর্ক কখনোই হয়নি”।
তবে এখনো সম্পর্কের ‘সত্যিকারের অবনতি’ হয়নি বলে মনে করেন।
“যদি বলা যেত যে হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করেছে অথবা তারা তাকে প্রত্যাহার করেছে, তাহলে সেটা হবে সম্পর্কের অবনতির সত্যিকারের ইঙ্গিত”।
ড. খান স্মরণ করিয়ে দেন, এর আগেও ঢাকায় এক পাকিস্তানি কূটনীতিক বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করার পর সম্পর্ক এমন তিক্ততার পর্যায়ে গিয়েছিল যে ওই কূটনীতিককে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা ঠিক হবে না বলেও মনে করেন ড. খান।
তিনি বলেন, এটা হলে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে’।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৭১ সালে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের পর গত ২২শে নভেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে ঐ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এর প্রতিবাদে বাংলাদেশ ২৩শে নভেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে প্রতিবাদ জানায়।
জবাবে পাকিস্তানও বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন