ভারতে একটি কথিত দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আজ শনিবার দিল্লির একটি আদালতে হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও পুত্র রাহুল। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের দুজনের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা বা দেশের বাইরে না যেতে দেওয়ার আর্জিও খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
এই প্রথমবার কোনও আদালতের মুখোমুখি হলেন তাঁরা। সোনিয়া ও রাহুলের সঙ্গেই আদালত কক্ষে গিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়াধ্রা সহ দলের সর্বোচ্চ নেতারা।বস্তুত সত্তরের দশকের পর ভারতের পরাক্রমশালী নেহেরু-গান্ধী পরিবারের কোনো সদস্য এই প্রথম আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ালেন।
ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের তহবিল তছরূপের অভিযোগে সোনিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মনিয়ম স্বামী।
দুই শীর্ষ নেতা-নেত্রীকে আদালতের শমন ধরানোর পিছনে বিজেপির দুরভিসন্ধি রয়েছে বলে গত কয়েকদিন ধরেই কংগ্রেস ভারতের পার্লামেন্টে গোলযোগ করছে। কংগ্রেস অভিযোগ করছে বিরোধী দলগুলির মুখ বন্ধ করিয়ে দেওয়ার জন্যই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং।
আজ শনিবারও সকাল থেকেই ভারতের নানা জায়গায় বিজেপি বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
যদিও বিজেপি বারে বারই বলে আসছে যে সনিয়া আর রাহুল গান্ধীকে তাদের সরকার শমন পাঠায় নি – এটা আদালতের নির্দেশ।
তাঁরা যদি নির্দোষ হন, তাহলে সেটা আদালতে গিয়েই প্রমাণ করুন, নরেন্দ্র মোদীর দিকে কেন অভিযোগ তুলছেন - বক্তব্য বিজেপির।
দিল্লির পাটিয়ালা হাউস আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার আগে দলের শীর্ষ নেতাদের ডেকে পাঠিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন সোনিয়া ও রাহুল গান্ধী। এই মামলায় হাজিরা দেওয়া, প্রয়োজন পড়লে জেলে যাওয়ার কথাও বলা হয়, যাতে যতদূর সম্ভব বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক ফায়দা তোলা যায় এই ইস্যু থেকে।
বিজেপি নেতা সুব্রহ্মনিয়াম স্বামীর দায়ের করা মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে যে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে জওহররাল নেহরু প্রকাশিত ন্যশানাল হেরাল্ড সংবাদপত্র থেকে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি তছরূপের চেষ্টা করেছেন সোনিয়া এবং রাহুল গান্ধী।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে ওই খবরের কাগজটির ৯০ কোটি টাকার ঋণ মেটানো হয়েছে, আবার ইয়ং ইন্ডিয়া নামে একটি সংস্থা তৈরি করে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে ওই কাগজের সম্পত্তি নিজেদের কবলে নিয়ে এসেছে গান্ধী পরিবার।
সম্পত্তি হাতানো বা তহবিল তছরূপের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেস বলে আসছে ওই কাগজটির ইতিহাস মনে রেখে পুনরুজ্জীবনের জন্য বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছিল দলের তরফে। আর ইয়ং ইন্ডিয়া তৈরি করে দলীয় তহবিলের ৯০ কোটি টাকার দায়ভার নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তহবিল তছরূপের কোনও প্রশ্নই নেই।
২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটির আবার শুনানি হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন