১৯৯২ সালের এপ্রিল মাসের রাতে এক ব্রিটিশ দম্পতি নিউ অরলিয়েন্স শহরের রাস্তায় হাঁটছিলেন। ছুটি কাটাতেই তারা সেখানে গিয়েছিলেন।
কিন্তু রাতের অন্ধকারে হঠাৎ একটি একটি গাড়ি এসে তাদের সামনে থামে এবং ডালার ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে জুলি স্টট গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।নিউ অরলিয়েন্সের রাস্তার ব্রিটিশ নারী খুন হবার বিষয়টি মার্কিন এবং ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সেই ঘটনার পর ১৯ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ রবার্ট জোনসেকে আটক করে পুলিশ। তার বিচার শুরু হলো। কিন্তু বিচারক এবং পুলিশ বুঝতে পেরেছিল রবার্ট আসল অপরাধী নয়।
সেই খুনটি আসলে করেছিল লেস্টার জোনস নামের আরেকজন কৃষ্ণাঙ্গ। তাকেও গ্রেফতার করা হয় এবং বিচার হয়।
সেই এলাকায় ধর্ষণ এবং ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধের সাথে লেস্টার জোন্সের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
একই অপরাধের জন্য দুই ব্যক্তি একসাথে সাজা খাটতে লাগলেন। একপর্যায়ে তদন্তে দেখা গেল রবার্ট আসল অপরাধী নয়।
নিউ অরলিয়েন্সের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জেমস স্টুয়ার্ট বলছেন তিনি তার তদন্তে লেস্টারকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। রবার্টকে তিনি সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিলেন।
কিন্তু তারপরও রবার্টকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়নি। ২৩ বছর ধরে তিনি কারাগারে আছেন। অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা প্রমাণ না হলেও কেন তিনি কারাগারে?
এর একটি কারণ হচ্ছে রবার্টের আইনজীবী আদালতে যথাযথভাবে তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরতে পারেননি। রবার্ট যে আসল অপরাধী নয়, সে বিষয়টি তার আইনজীবী আদালতে তথ্য-প্রমাণসহ তুলে ধরেননি।
কিন্তু সেই আইনজীবী চারকলিন অ্যাটকিনস বলেছেন ২৩ বছর আগে তিনি রবার্টের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন।
সেই বিচার প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই বলছেন বিনা বিচারে কারাগারে থাকা রবার্ট জোনস একটি উদাহরণ মাত্র। এ রকম আরো অনেকে আছেন রবার্টের মতো পরিস্থিতি শিকার হয়েছেন।
এর একটি বড় কারণ হচ্ছে লুইজিয়ানায় আফ্রিকান-আমেরিকান অনকেই বিচার ব্যবস্থায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
যখনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তখন সরকারী কৌশলীরা আদালতে যথাযথ তথ্য তুলে ধরেন না। সেজন্য অন্যায়ভাবে অনেক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণের সাজা হয়ে যায়।
লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের প্রধান আইন কর্মকর্তাও স্বীকার করছেন এ ধরনের ঘটনা ঘটে। সরকারী কৌশলীরা কখনো ইচ্ছাকৃত আবার কখনো অজ্ঞতাপ্রসূত সকল তথ্য –প্রমাণ তুলে ধরেনা । bbc
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন