মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

দেড় লক্ষাধিক শরণার্থী নেবে ইইউ

     
সার্বিয়া থেকে ঢুকে হাঙ্গেরির রসজকে গ্রামে নিবন্ধনের জন্য তিন শিশুকে নিয়ে অপেক্ষা করছেন শরণার্থী এক নারী। শরণার্থী শিবিরে জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানোর পর গতকাল অন্তত ২০০ শরণার্থী নিবন্ধনের পর ওই এলাকা ছাড়েন l ছবি: এএফপি
শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এই সংস্থাভুক্ত দেশগুলোর জন্য নতুন করে কোটা নির্ধারণ করে দিচ্ছে। এর ফলে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে ঠাঁই হবে আরও ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থীর। এর আগে ৪০ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ইইউ।
জার্মানিতে গত দুই দিনে ২০ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। আরও ১১ হাজারের গতকাল সোমবারই আসার কথা। খবর রয়টার্স ও আল-জাজিরার।
ইইউর একটি সূত্র জানায়, আগামী বুধবার ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ-ক্লদ জাংকার শরণার্থীদের আশ্রয়-সংক্রান্ত এ নতুন প্রস্তাব প্রকাশ করবেন। প্রস্তাব অনুযায়ী জার্মানিকে আরও ৩১ হাজারের বেশি শরণার্থী গ্রহণ করতে হবে। আর ফ্রান্সকে নিতে হবে ২৪ হাজার ৩১ জন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ গতকালই ঘোষণা দিয়েছেন, দুই বছরে তাঁর দেশ ২৪ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে।
চাপের মুখে শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাজ্যও। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, পাঁচ বছরে ২০ হাজার সিরীয় শরণার্থী নেবে তাঁর দেশ। ক্যামেরন গতকাল বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিচ্ছি, এই পার্লামেন্টের মেয়াদকালে যুক্তরাজ্যকে ২০ হাজার শরণার্থীকে পুনর্বাসন করতে হবে।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ পথে ইইউতে প্রবেশ করা শরণার্থীরা এই সুযোগ পাবে না। বরং জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কের শিবিরগুলোতে থাকা সিরীয় শরণার্থীদের যুক্তরাজ্যে পুনর্বাসন করা হবে।
এদিকে কানাডার কুইবেক প্রদেশ ৩ হাজার ৬৫০ জন সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। প্রদেশটির অভিবাসনমন্ত্রী কাথলিন ওয়েল গতকাল এ কথা জানান। অবশ্য এই পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আগে সবুজ সংকেত পেতে হবে।
তবে আশ্রয়প্রার্থীদের বিষয়ে সব সময় কঠোর বলে পরিচিত হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেছেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোর সীমান্ত নিরাপদ না করা পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না। তিনি তুরস্ককে এসব শরণার্থী গ্রহণ করতে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য ইইউর প্রতি আহ্বান জানান। ওরবান বলেছেন, বিপদে পড়ে নয়, বরং আর্থিক লাভের জন্যই শরণার্থীরা ইউরোপমুখী হচ্ছে। আর এভাবে শরণার্থী আসতে থাকলে ইউরোপের ‘কল্যাণমূলক খ্রিষ্টান রাষ্ট্রগুলোর’ বিপদ বাড়বে।
এদিকে লেসবস দ্বীপের কাছে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকা একটি নৌযানের যাত্রীদের উদ্ধারে গ্রিসের যাত্রীবাহী একটি ফেরি থেকে লাইফবোট পাঠানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের সমালোচনায় বান কি মুন: জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন স্বীকার করেছেন, বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর বিভক্তির কারণেই নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ায় ব্যর্থ হয়েছে। বিভক্তির কারণে সেখানে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করা যায়নি। ফলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আশ্রয়ের জন্য কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় শরণার্থী-সংকট শুরু হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বান কি মুন রাশিয়া ও চীনকে ‘জাতীয় স্বার্থের বাইরে’ আসার আহ্বান জানান। সিরিয়ার সমস্যা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগে বারবার ভেটো দেওয়া বন্ধ করার জন্যও দুটি দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বান কি মুন বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐক্য চাই। তারা বিভক্ত হয়ে পড়লে জাতিসংঘের পক্ষে কিছু করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন