সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই মূল বেতন ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর ধরা হবে। আর ভাতা কার্যকর হবে ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদন করা হয়।
এর
সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সশস্ত্র বাহিনীর জন্যও নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদন দেওয়া
হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা জানান।
বৈঠকের
পর তিনি বলেন, নতুন নিয়মে শ্রেণি প্রথা, সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল থাকবে
না। বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট হবে মূল বেতনের শতকতা হারে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুটি উৎসব ভাতার পাশাপাশি প্রতি বছর বাংলা নববর্ষে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়তি একটি ভাতা পাবেন।
সর্বোচ্চ
স্কেলের মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হলেও মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের মূল বেতন ৮৬ হাজার টাকা এবং জ্যেষ্ঠ সচিবদের
ক্ষেত্রে ৮২ হাজার টাকা হবে। সপ্তম বেতন কাঠামোতে তাদের মূল বেতন ছিল
যথাক্রমে ৪৫ হাজার ও ৪২ হাজার টাকা।
সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী, এই
গ্রেডের কর্মকর্তাদের মূল বেতন নির্ধারিত, অর্থাৎ প্রতিবছর তাদের বেতন আর
বাড়ে না বা ‘ইনক্রিমেন্ট’ যোগ হয় না। তবে তারাও নিয়ম অনুযায়ী বাসা ভাড়াসহ
অন্যান্য ভাতা পান।
নতুন স্কেলে শুধু বেতন দিতেই চলতি অর্থ বছরে
সরকারের ১৫ হাজার ৯০৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। আগামী বছর
বেতন-ভাতা খাতে অতিরিক্ত লাগবে ২৩ হাজার ৮২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
এ
বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “গতবারের চেয়ে এবার রেভিনিউ বেশি হয়েছে।
আগামী বছর আয় আরও বাড়বে। অতিরিক্ত খরচ বহন করা সরকারের জন্য কঠিন হবে না।”
বর্তমানে মূল বেতনের ৮০ শতাংশ হারে পেনশন ধরা হলেও তা বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
যেভাবে নতুন বেতন স্কেল
এর আগে সরকারি
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে সপ্তম বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছিল
২০০৯ সালের ১ জুলাই। সে অনুযায়ী এতোদিন সরকারি চাকরিজীবীরা সর্বনিম্ন ৪,১০০
টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা ‘বেসিক’ ধরে বেতন পেয়ে আসছিলেন।
এর
সঙ্গে ২০১৩ সালের ১ জুলাই তারা পাচ্ছিলেন মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে
মহার্ঘ্য ভাতা, যা নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দিন থেকে বিলুপ্ত হবে।
আগের
বেতন কাঠামোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত বেতন কমিশন গত ২১ ডিসেম্বর অষ্টম বেতন
স্কেলের সুপারিশ জমা দেন। ১৬টি গ্রেডে সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা এবং
সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা মূল বেতন ধরে নতুন কাঠামো প্রস্তাব করে কমিশন।
ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সচিব কমিটি গত ১৩ মে সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ এবং সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা মূল ধরে কাঠামো সুপারিশ করে।
অর্থমন্ত্রণায়ে
পর্যালোচনার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮
হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে নতুন কাঠামো অনুমোদন করা হল।
মন্ত্রিপরিষদ
সচিব বলেন, “বেতন কমিশন ১৬ গ্রেডের কাঠামো দিলেও সচিব কমিটির সুপারিশে আগের
মতো ২০টি গ্রেডেই এই বেতন কাঠামো করা হয়েছে। সরকারি চারকিতে কেউ যদি
সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল বেতনে প্রবেশ করে, এক পর্যায়ে তার বেতন ২০
হাজার ১০ টাকায় দাঁড়াবে।”
বিজ্ঞান গবেষণায় কেউ বিশেষ অবদান রাখলে তাকে যে কোনো পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
২০ গ্রেড
নতুন কাঠামোতে প্রতিটি গ্রেডের শুরুর বেতন হবে এরকম
গ্রেড
|
সপ্তম বেতন স্কেল (টাকা)
|
অষ্টম বেতন স্কেল (টাকা)
|
বেতন বৃদ্ধি (টাকা ও শতকরা)
|
মন্ত্রিপরিষদ সচিব/মুখ্য সচিব
|
৪৫,০০০
|
৮৬,০০০
|
৪১,০০০ (৯১.১১%)
|
জ্যেষ্ঠ সচিব
|
৪২,০০০
|
৮২,০০০
|
৪০,০০০ (৯৫.২৩%)
|
গ্রেড-১
|
৪০,০০০
|
৭৮,০০০
|
৩৮,০০০ (৯৫%)
|
গ্রেড-২
|
৩৩,৫০০
|
৬৬,০০০
|
৩২,৫০০ (৯৭.০১%)
|
গ্রেড-৩
|
২৯,০০০
|
৫৬,৫০০
|
২৭,৫০০ (৯৪.৮২%)
|
গ্রেড-৪
|
২৫,৭৫০
|
৫০,০০০
|
২৪,২৫০ (৯৪.১৭%)
|
গ্রেড-৫
|
২২,২৫০
|
৪৩,০০০
|
২০,৭৫০ (৯৩.২৫%)
|
গ্রেড-৬
|
১৮,৫০০
|
৩৫,৫০০
|
১৭,০০০ (৯১.৮৯%)
|
গ্রেড-৭
|
১৫,০০০
|
২৯,০০০
|
১৪,০০০ (৯৩.৩৩%)
|
গ্রেড-৮
|
১২,০০০
|
২৩,০০০
|
১১,০০০ (৯১.৬৬%)
|
গ্রেড-৯
|
১১,০০০
|
২২,০০০
|
১১,০০০ (১০০%)
|
গ্রেড-১০
|
৮,০০০
|
১৬,০০০
|
৮,০০০ (১০০%)
|
গ্রেড-১১
|
৬,৪০০
|
১২,৫০০
|
৬,১০০ (৯৫.৩১%)
|
গ্রেড-১২
|
৫,৯০০
|
১১,৩০০
|
৫,৪০০ (৯১.৫২%)
|
গ্রেড-১৩
|
৫,৫০০
|
১১,০০০
|
৫,৫০০ (১০০%)
|
গ্রেড-১৪
|
৫,২০০
|
১০,২০০
|
৫,০০০ (৯৬.১৫%)
|
গ্রেড-১৫
|
৪,৯০০
|
৯,৭০০
|
৪,৮০০ (৯৭.৯৫%)
|
গ্রেড-১৬
|
৪,৭০০
|
৯,৩০০
|
৪,৬০০ (৯৭.৮৭%)
|
গ্রেড-১৭
|
৪,৫০০
|
৯,০০০
|
৪,৫০০ (১০০%)
|
গ্রেড-১৮
|
৪,৪০০
|
৮,৮০০
|
৪,৪০০ (১০০%)
|
গ্রেড-১৯
|
৪,২৫০
|
৮,৫০০
|
৪,২৫০ (১০০%)
|
গ্রেড-২০
|
৪,১০০
|
৮,২৫০
|
৪,১৫০ (১০১.২১%)
|
মোশাররাফ
বলেন, “স্থায়ী পে-কমিশনের প্রয়োজন হবে না বলে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ইনক্রিমেন্টের নতুন পদ্ধতি নেওয়া
হয়েছে, তাই স্থায়ী পে-কমিশনের প্রয়োজন নেই। নতুন পে-কমিশন করার প্রয়োজন আছে
কি না তাও ভেবে দেখতে হবে।”
টাইমস্কেল-সিলেকশন গ্রেড বিলুপ্ত
সরকারি
চাকুরেদের জন্য প্রচলিত সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল প্রথা বিলুপ্ত করে
প্রতি বছরের ১ জুলাই একসঙ্গে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বাড়ানোর
সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আগে ইনক্রিমেনট
টাকার অঙ্কে লেখা থাকত, এখন নির্ধারিত ইনক্রিমেন্ট থাকছে না। মূল বেতনের
শতকতা হারে এই ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে।”
বেতন গ্রেড অনুযায়ী বার্ষিক
বেতনবৃদ্ধির হারেও পার্থক্য থাকবে জানিয়ে মোশাররাফ বলেন, যারা নিচের দিকে
আছেন তাদের বেতন বৃদ্ধির হার বেশি হবে।
“২০ থেকে ৬ নম্বর গ্রেডে
বেতনধারীদের ইনক্রিমেন্ট হবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে। পঞ্চম গ্রেডে ৪
দশমিক ৫ শতাংশ, গ্রেড ৩ ও ৪ এর ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ, গ্রেড ২ এর ক্ষেত্রে মূল
বেতনের ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে বেতন বাড়বে।”
সচিবের দাবি, টাইম স্কেলে যে পরিমাণ বেতন বাড়ত এই পদ্ধতিতে তার চেয়ে বেশি বেতন বাড়বে। এতে সরকারি কর্মচারীরাই বেশি লাভবান হবেন।
“টাইম
স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বিলুপ্ত করার বিষয়ে বেতন কমিশনের সুপারিশে
মন্ত্রিসভা সন্তুষ্ট। কারণ কেউ টাইম স্কেল পায় কেউ পায় না। কেউ সিলেকশন
গ্রেড পায়, বেশির ভাগ কর্মচারী সিলেকশন গ্রেড পায় না। এখন সবার জন্যই বেতন
বাড়বে, সবার জন্যই ইনক্রিমেন্ট হবে। এই সুবিধা সার্বজনীন।”
মন্ত্রিপরিষদ
সচিব জানান, অর্থ বিভাগ নতুন বেতন কাঠামোর আদেশ জারি করবে। ওই আদেশ জারির
আগ পর্যন্ত যারা সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পেয়েছেন তা বহাল থাকবে।
“নতুন করে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড দেওয়া হবে না। বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ায় আর মহার্ঘ্য ভাতা থাকবে না।”
শ্রেণি বিলুপ্ত
সরকারি
চাকরিজীবীদের জন্য বিদ্যমান শ্রেণি প্রথাও বিলুপ্ত করা হয়েছে। নতুন বেতন
কাঠামো অনুমোদন দিয়ে মন্ত্রিসভা গ্রেডের ভিত্তিতে কর্মচারীদের পরিচয়ের
‘অনুশাসন’ দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, “আর কোনো
শ্রেণি থাকবে না। শ্রেণি বিভাজন বিলুপ্ত করা হয়েছে। গ্রেড দিয়ে পরিচয় হবে,
ক্লাস দিয়ে নয়। তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণি বললে অনেকে অস্বস্তি বোধ করেন। এটা
আর থাকছে না, এটা ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছিল।”
শ্রেণি অনুযায়ী
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে যেসব অনুশাসন রয়েছে- সেসব বিধিবিধান সংশোধন করা
হবে। আর সিদ্ধান্তটি এখন থেকেই কার্যকর হবে বলে সচিব জানান।
ভাতা
সচিব
বলেন, “নতুন বেতন স্কেলে বিশেষ ভাতাগুলো নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বেতনের
উপর বিভিন্ন হারে আর এগুলো ধার্য হবে না। বর্তমানে কেউ কেউ হয়তো আগের থেকে
কম ভাতা পাবেন, কেউ বেশি পাবেন।”
সপ্তম বেতন স্কেলে অঞ্চল ভেদে যে হারে বাসা ভাড়া দেওয়া হত, অষ্টম স্কেলেও একই হার কার্যকর হবে।
সপ্তম
বেতন স্কেলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাসে ৭০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে
আসছিলেন। তবে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী পেনশপ্রাপ্তরা মাসে এক হাজার টাকা এবং
অন্য পেনশনপ্রাপ্তরা মাসে ৭০০ টাকা করে চিকিৎসা ভাতা পাচ্ছিলেন।
এছাড়া
উৎসব ভাতা, টিফিন ভাতা, ধোলাই ভাতা, কার্যভার ভাতা, ডোমেস্টিক ইউড
অ্যালাউন্স, ভ্রমণ ভাতা, পাহাড়ি ভাতা ও প্রেষণ ভাতা নামে বিভিন্ন ভাতা
রয়েছে তাদের।
সমান হল তিন বাহিনীর প্রধানের বেতন-র্যাংক
মন্ত্রিপরিষদ
সচিব জানান, তিন বাহিনীর প্রধানদের জন্য একই বেতন ও র্যাংক নির্ধারণ করে
সশস্ত্র বাহিনীর নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
এতোদিন সেনা প্রধানের বেতন নির্ধারিত থাকলেও নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান বেতন পেয়ে আসছিলেন লেফটেনেন্ট জেনারেলের র্যাংকে।
“কেবিনেট
সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তিন বাহিনীর প্রধানের বেতন সমান হওয়া সমীচীন।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, নৌ বাহিনী এবং বিমান বাহিনী প্রধানের র্যাংক
আপগ্রেড করা হবে। কাজেই তিন বাহিনীর প্রধানের নির্ধারিত বেতন হবে ৮৬ হাজার
টাকা।”
অর্থাৎ, তিন বাহিনীর প্রধানরা এখন থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সমান বেতন পাবেন।
একইভাবে সামরিক বাহিনীর লেফটেনেন্ট জেনালের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মূল বেতন হবে জ্যেষ্ঠ সচিবদের সমান, ৮২ হাজার টাকা।
আর
সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ গ্রেডে সচিব পদমর্যাদায় মেজর জেনারেল ও সমান
র্যাংকের কর্মকর্তাদের মাসিক মূল বেতন ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭৮ হাজার টাকা
করা হয়েছে।
সচিব বলেন, “সরকারের বেসামরিক কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর
সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই সশন্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাঠামো
নির্ধারণ করা হয়েছে।”
সরকারি চাকরিজীবীদের মতো সশস্ত্র বাহিনীর
সদস্যরাও এতোদিন সর্বনিম্ন ৪,১০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা ‘বেসিক’
ধরে বেতন পেয়ে আসছিলেন। তবে তাদের ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা সরকারি
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তুলনায় বেশি।
সর্বনিম্ন ধাপে প্রতিরক্ষা
মন্ত্রণালয়ের আওতায় কিছু কর্মচারী আছেন, যারা সৈনিক নন এবং সেনাবাহিনীর
সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নন। তারা সর্বনিম্ন গ্রেডে ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল
বেতন পাবেন। আর একজন সৈনিকের মূল বেতন হবে ৮ হাজার ৫০০ টাকা।
নতুন কমিশন পাওয়া একজন সেকেন্ড লেফটেন্যান্টের মূল বেতন হবে মাসে ২২ হাজার টাকা, যা এতোদিন ১১ হাজার টাকা ছিল।
সশস্ত্র
বাহিনীর বেতন কাঠামোর অন্য বিষয়গুলো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঠিক করেছে
জানিয়ে অর্থ বিভাগ থেকে এ নিয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেয়নি।
সচিব
কমিটি বেতন কাঠামো নিয়ে ১৩টি সভা করেছে জানিয়ে মোশাররাফ বলেন, “তিনটি সভায়
সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা
সামগ্রিক বিষয়টি অবহিত করেছি।”
পর্যালোচনা হবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন
পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য
বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন নিয়ে
মন্ত্রিসভা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের যে
দায়িত্ব, সমাজে তাদের যে ভূমিকা, অবস্থান এ সম্পর্কে সরকার পরিপূর্ণভাবে
সচেতন।”
সপ্তম বেতন স্কেলে সচিব, সিলেকশন গ্রেডের অধ্যাপক ও মেজর
জেনারেল এক নম্বর গ্রেডে থাকলেও অষ্টম বেতন স্কেলের সুপারিশে সিলেকশন
গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও অধ্যাপকদের বেতন আগের তুলনায় নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে
অভিযোগ করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো করারও দাবি রয়েছে তাদের।
সচিব
বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরা
হয়েছে। মন্ত্রিসভায় তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা
সম্ভব নয়।
“সেজন্য মন্ত্রিসভা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের
প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে সুপারিশ করার দায়িত্ব দিয়েছে বেতন বৈষম্য
দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
নতুন স্কেলে বেতন পাবেন জানিয়ে মোশাররাফ বলেন, যিনি এখন যে গ্রেডে আছেন,
সেই গ্রেডের নতুন কাঠামোতেই বেতন পাবেন।
“যে বর্তমানে যে সুবিধা পাচ্ছে, তার অবনমন কখনও করা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।”
মোশাররাফ
বলেন, শিক্ষকদের প্রস্তাবগুলো ‘মৌলিক বিষয় এবং তা গুরুত্বপূর্ণ’। বেতন
বৈষম্য কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কথা বিস্তারিতভাবে শোনার সুযোগ
পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদেরও কমিটিতে রাখা হবে বলে জানান তিনি।
“বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষকদের মর্যাদা যেন সমুন্নত থাকে, মন্ত্রিসভা সে বিষয়ে ডিপলি কমিটেড।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মর্যাদা এখন যা আছে তাই থাকবে। গণমাধ্যমে এ
বিষয়ে যেসব প্রতিবেদন এসেছে তার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই।”
মোশাররাফ
বলেন, বেতন কমিশন ও সচিব কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ‘পারস্পরিক সম্পর্কের’
কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই সুপারিশের মাধ্যমে কাউকে ‘উপরে উঠানো’ বা ‘নিচে
নামানো’ হয়নি।
“সবার বেতনেই বেড়েছে, সবার ভাতাও কিছুটা বাড়বে।”
নতুন স্কেলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও
বেসরকারি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী এ
বছরের ১ জুলাই থেকে বেতন পাবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
তবে কোন পদ্ধতিতে তাদের বেতন দেওয়া হবে- তা পর্যালোচনা করে ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি।
“কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা হবে তার জন্য কিছুটা ওয়েট করতে হবে। অর্থ বিভাগ সব বিষয় পর্যালোচনা করে খুটিনাটিসহ পরিপত্র জারি করবে।”
এমপিওভুক্ত
শিক্ষকদের বেতন নিয়ে আর মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হবে না জানিয়ে
মোশাররাফ বলেন, “অর্থ বিভাগের পরিপত্রেই সব বলা থাকবে।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন