সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বিফ’ না ‘বাফেলো’? বিতর্ক আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে

aligarh_muslim_univ_campusImage copyrightwiki
Image captionআলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস
ভারতের ঐতিহ্যবাহী আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যান্টিনে বিফ বা গোরুর মাংস পরিবেশন করা হচ্ছে – এই অভিযোগ ওঠার পর কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করে জানিয়েছে ওটা আসলে ‘বাফেলো’ বা মহিষের মাংস।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মেডিক্যাল কলেজ ক্যান্টিন আছে, তার মেনুতে ‘বিফ বিরিয়ানি’ নামে একটি পদ আছে – আর সেই মেনুর ছবি গতকাল থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ ও সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে।
বিফ বা গোরুর মাংস নিষিদ্ধ করা নিয়ে গত বেশ কয়েক মাস ধরে ভারতে তুমুল বিতর্ক চলছে। নতুন করে বেশ কিছু রাজ্যে বিফ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশে বিফ খাওয়ার মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে এক প্রৌঢ়কে পিটিয়েও মেরে ফেলেছে জনতা।
এই পরিস্থিতিতে বিফ বিরিয়ানি-র অভিযোগ নিয়ে আলিগড়েও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আলিগড় যে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত – সেখানে বিফ বা গরুর মাংস আগে থেকেই নিষিদ্ধ।
আলিগড়ের বিজেপি মেয়র শকুন্তলা ভারতী তার সঙ্গীসাথীদের নিয়ে পুলিশ-প্রধানের দফতরের সামনে সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কট্টর হিন্দুত্ববাদী নানা সংগঠনের কর্মীরাও ওই বিক্ষোভে যোগ দেন।
তাদের দাবি ছিল, বিফ বিরিয়ানি পরিবেশন করার অভিযোগে ওই ক্যান্টিনের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
beef_protest_india
Image captionবিফ নিষিদ্ধ করার পক্ষে-বিপক্ষে ভারতে তর্কবিতর্ক চলছে
এদিকে এই বিক্ষোভের খবর পেয়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের নির্দেশ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর এম মহসিন খান সঙ্গে সঙ্গে ওই ক্যান্টিনে ছুটে গিয়ে পরীক্ষা করেন বিফ বিরিয়ানি বস্তুটা আসলে কী!
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র রাহাত আবরার সাংবাদিকদের জানান, তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন ওই বিরিয়ানিতে কোনও গরুর মাংসের লেশমাত্র নেই – ওখানে শুধুই বাফেলো বা মোষের মাংস ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা বেআইনি নয় মোটেই।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নামী ও মর্যাদাবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মিথ্যা বদনাম দিয়ে কলঙ্কিত করতেই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলেও মি আবরার অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, ওই ক্যান্টিনে খাবার পরিবেশনে ঠিকার মেয়াদ ফুরোচ্ছে খুব শিগগিরি। নতুন ঠিকার বরাত করায়ত্ত করার জন্যই কিছু ‘স্বার্থাণ্বেষী গোষ্ঠী’ অহেতুক এই বিতর্ক তৈরি করেছে বলে তারা ধারণা করছেন।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে একটি সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের স্বীকৃতি বজায় রাখতে পারবে কি না তা নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক চলছে – এর মধ্যে এই বিফ বিতর্ক যে তাদের নতুন করে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা তাতে সন্দেহ নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন