উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসঞ্জকে ব্রিটেন এবং সুইডেন কার্যত বেআইনিভাবে বন্দী করে রেখেছে বলে জাতিসংঘের এক প্যানেল যে অভিযোগ করেছে, সেটাকে উড়িয়ে দিয়েছেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উল্লেখ্য যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেপ্তার মিস্টার অ্যাসঞ্জ গত চার বছর ধরে লন্ডনে একুয়েডোরের দূতাবাসে লুকিয়ে আছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্যানেল মিস্টার অ্যাসঞ্জকে মুক্তি এবং সেই সঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণও দিতে বলেছে।
জাতিসংঘের আইনজ্ঞদের একটি প্যানেল রায় দিয়েছে জুলিয়ান অ্যাসঞ্জকে তার আটকাবস্থা থেকে মুক্তি দেওয়া উচিত এবং তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণের জন্য তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।
সুইডেনে তার বিরুদ্ধে আনা তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে একুয়েডোর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে আছেন মিঃ অ্যাসঞ্জ।
এই অভিযোগ মিঃ অ্যাসঞ্জ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে এসেছেন ।
কিন্তু তাকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার জন্য ব্রিটেন মিঃ অ্যাসঞ্জকে সুইডেনে ফেরত পাঠাবে এই আশংকাতেই তিনি লন্ডনে একুয়েডোর দূতাবাসের কাছে আশ্রয় চান।
জুলিয়ান অ্যাসঞ্জ জাতিসংঘ মানবাধিকার প্যানেলের রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন ব্রিটেন ও সুইডেন তাকে ''বিনা বিচারে আটক'' রেখেছে বলে জাতিসংঘ যে মন্তব্য করেছে তা তার জন্য বিরাট এক বিজয়।
একুয়েডোর দূতাবাস থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে তিনি তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন তিনি খুশি এবং তিনি বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি চান।
তবে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড একে হাস্যকর বলে মন্তব্য করে বলেছেন প্যানেলের এই রিপোর্ট কিছুই বদলাবে না।
প্যানেলের অভিমতকে 'উদ্ভট' আখ্যা দিয়ে মিঃ হ্যামন্ড বলেছেন মিঃ অ্যাসঞ্জ আইনকে ফাঁকি দিতে লুকিয়ে রয়েছেন এবং তিনি দূতাবাসের বাইরে এলেই তাকে গ্রেপ্তার করে সুইডেনের কাছে প্রত্যর্পণ করা হবে।
তিনি বলেন প্যানেলের রায় ব্রিটেনের জন্য বাধ্যতামূলক নয় এবং তার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনও কার্যকর রয়েছে।
জাতিসংঘের প্যানেল মিঃ অ্যাসঞ্জকে তার ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই আইন মানতে ব্রিটেন বাধ্য কীনা সে বিষয়ে মন্তব্য না করলেও জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেছেন তাদের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতেই নেওয়া হয়েছে।
২০১০ সালে প্রথম মিঃ অ্যাসঞ্জকে আটক করে লন্ডনের একটি কারাগারে রাখা হয় দশদিন। এরপর ব্রিটেনের বিভিন্ন আদালতে একের পর এক তার একাধিক আবেদন খারিজ হয়ে গেলে তিনি একুয়েডোরের দূতাবাসের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে সফল হন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন