ভারতের হরিয়ানায় এক মহিলা রোববার পুলিশের কাছে গিয়ে নালিশ করেছেন রাজ্যে সংরক্ষণের দাবীতে জাঠ সম্প্রদায়ের হিংসাত্মক আন্দোলনের সময় তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে।
পুলিশ মামলা নিয়েছে। তবে অভিযোগকারী ঐ মহিলার নাম জানানো হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির বাসিন্দা ঐ মহিলা অভিযোগ করেছেন ২২শে ফেব্রুয়ারির রাতে সাতজন পুরুষের একটি দল হাইওয়েতে গাড়ি থামিয়ে তাকে জোর করে নামিয়ে নিয়ে যায়। সে সময় তার সাথে তার ১২ বছরের মেয়ে ছিল। তাকে অবশ্য হামলাকারীরা কিছু করেনি।
জাট সম্প্রদায়ের ঐ বিক্ষোভের সময় রাজ্যের মুর্থাল এলাকায় আন্দোলনকারীদের হাতে অন্তত ১০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
তবে এই প্রথম একজন মহিলা সাহস করে সামনে এগিয়ে এলেন।
কোনও অভিযোগ জমা না পড়ায় রাজ্য পুলিশ প্রথম দিকে এই ঘটনার কথা অস্বীকার করে আসছিল।
কিন্তু কথিত ধর্ষনের ঘটনাস্থলে নারীদের ছেঁড়া পোষাক খুঁজে পায় সংবাদমাধ্যম।
তারপরেই হরিয়ানা পুলিশ তিনজন নারী অফিসারকে নিয়ে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে।
চাকরী আর শিক্ষায় সংরক্ষণের দাবীতে গত সপ্তাহে যখন গোটা হরিয়ানায় হিংসাত্মক বিক্ষোভ চলছিল, সেসময় মুর্থাল এলাকায় বেশ কিছু গাড়ি থামিয়ে দিয়ে, যাত্রীদের নামিয়ে গাড়িগুলি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
একটি সংবাদপত্র বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী খবর ছাপে, যে গাড়িগুলি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তার নারী যাত্রীদের ধর্ষণ করা হয় সেই রাতে। আন্দোলনরত জাঠ সম্প্রদায়ের লোকেরাই মহাসড়কের পাশে একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে ওই নারীদের ধর্ষন করে বলে অভিযোগ ওঠে।
এর আগে স্থানীয় পুলিশ দাবী করেছিল, যে কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা, সেগুলোর মালিকদের চিহ্নিত করে প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এমনকি নারী যাত্রীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। কেউই ধর্ষণের কথা জানান নি।
ওই ঘটনাস্থলের ২০০ মিটার দূরে একটি অতি জনপ্রিয় ধাবা বা পথচলতি খাবারের দোকান রয়েছে। তার মালিকও জানিয়েছেন যে কয়েকজন নারী পুরুষ তাঁর ধাবায় আশ্রয় নিয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের হাত থেকে বাঁচতে, তবে তাঁরা কেউই ধর্ষণের কথা বলেন নি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি অবশ্য বলছে পুলিশ আসলে ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছে।
তবে শনিবার একজন ট্রাক চালক সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে জানিয়েছেন যে তিনি সেই রাতের ঘটনা অনেকটাই দেখেছেন।
তার পরদিন এক মহিলা মামলা করলেন।
ভারতে কোনও আন্দোলন-বিক্ষোভ চলাকালীন গণধর্ষণের এধরণের ঘটনা বিরল।
জাঠ সম্প্রদায়ের ওই বিক্ষোভও যথেষ্টই বিরল, যেখানে অস্ত্র হাতে হাজার হাজার মহিলা, কিশোর, যুবকরা রাস্তায় নেমে যথেচ্ছ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে কয়েকদিন ধরে। ওই বিক্ষোভ সামাল দিতে সেনা নামাতে হয়েছিল। গোটা রাজ্যে মারা যায় অন্তত ৩০ জন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন