মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সিরিয়ায় দুটো হাসপাতালে বোমা হামলা, বহু হতাহত

Image copyrightReuters
Image captionবোমা হামলায় বিধ্বস্ত এই হাসপাতাল
চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা মেদসা স’ ফ্রঁতিয়ের বা এমএসএফ বলছে, তাদের সহযোগিতায় সিরিয়ায় পরিচালিত একটি হাসপাতালে ইচ্ছাকৃতভাবে বোমা ফেলা হয়েছে।
সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, ইদলিব প্রদেশে ৩০ শয্যার এই হাসপাতাল ধ্বংস হওয়ায় ৪০ হাজারের মতো লোক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে।
এই হামলার জন্য এমএসএফ এখনও পর্যন্ত সরাসরি কাউকে দায়ী না করলেও, লন্ডন ভিত্তিক সিরিয়ান একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী বলছে, রুশ বিমান থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে।
মারাত আল নুমান নারেমর এই জায়গাটিতে মেদসা স’ ফ্রঁতিয়ের সহায়তায় পরিচালিত হাসপাতালটিতে দু’দফা আক্রমণে চারটি মিসাইল আঘাত হানে।
সিরিয়ান অবসারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস নামের একটি ব্রিটিশ সংস্থা বলছে, এতে ন’জন মারা যায়, এবং রুশ বিমান থেকেই ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।
বিমান হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে - যাতে দেখা যাচ্ছে আক্রান্ত ভবনটি থেকে ঘন কালো ধোয়ার কুণ্ডলী উঠছে। ওই ভিডিওতে একজন লোককে ঘটনার বর্ণনা দিতে শোনা যায়।
তিনি বলেন, আল্লাহ আমাদের সাহায্য করুন। এমএসএফের হাসপাতালে রাশিয়ান বিমান হামলা করেছে। এটা দ্বিতীয় হামলা।
Image copyrightReuters
Image captionইদলিব প্রদেশের বিধ্স্ত হাসপাতাল
আরো খবর পাওয়া গেছে, তুরস্কের সীমান্তের কাছে সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত গ্রামের একটি হাসপাতালে এবং একটি স্কুলে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
আজাজ নামের এই জায়গাটিতে আলেপ্পো থেকে আসা সিরিয়ান শরণার্থীদের ভিড় বাড়ছে। আর এখানেই তুরস্কের বাহিনী একটি কুর্দি মিলিশিয়া গ্রুপের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাচ্ছে।
এই মিলিশিয়াদের তুরস্ক সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মনে করলেও তারা আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পায়, কারণ তারা ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিত্র মনে করে। তারা সম্প্রতি এই এলাকায় অবস্থান সংহত করছিল।
তুর্কী প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোলু বলেছেন, আজাজ কুর্দিদের হাতে চলে যাক এটা তার সরকার কখনোই হতে দেবে না।
কিয়েভ সফররত মি. দাভুতোলু মস্কোর বিরুদ্ধেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
Image copyright
Image captionকুর্দী যোদ্ধা
তিনি বলেন, “রাশিয়া যদি এরকম সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো আচরণ করতে থাকে এবং সিরিয়ার বেসামরিক লোকদের পালাতে বাধ্য করতে থাকে, তাহলে আমাদের এর জবাবে চরম ব্যবস্থা নেবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
সিরিয়া এরই মধ্যে অভিযোগ করেছে যে তুরস্ক তার এই কুর্দিবিরোধী অভিযানের সময় প্রায় একশ সৈন্যকে সীমান্ত পার হয়ে সিরিয়ায় ঢুকতে দিয়েছে - যদিও তুরস্ক তা অস্বীকার করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এর মধ্যেই বলেছেন, শান্তি প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে সিরিয়ার এই সংঘাতের মধ্যে আরো বিদেশী সৈন্য জড়িয়ে পড়তে পারে।
এর জবাবে সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভিয়েদেভ বলেন, এর পরিণাম হবে একটি দীর্ঘ ও পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ।
তিনি বলেন, “আপনারা কাউকে ভয় দেখাবার চেষ্টা করবেন না। কেউই নতুন কোন যুদ্ধ চায় না। কিন্ত আরব দেশগুলো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি স্থল অভিযান চালাতে চায় তার পরিণাম হবে দীর্ঘ এবং পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ।”
বিবিসির মার্ক লোয়েন বলছেন, সিরিয়ায় এখন পরিস্থিতি এতই জটিল যে আর কোন নতুন যুদ্ধ শুরু হোক তা কেউ চায় না কিন্তু এখন তুরস্ক এর মধ্যে আবার আরো একটি যুদ্ধ শুরু করেছে।
কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ নেটোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি আলোচনার ওপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন