২০০০ সালের জুন মাসটি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি অবিস্মরণীয় দিন।
এই মাসটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পায় বাংলাদেশ। আরো স্পষ্ট করে বললে ক্রিকেটের ক্ল্যাসিক ফর্ম টেস্ট খেলবার অধিকার লাভ করে।এই টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার ব্যাপারটা সহজ ছিল না।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মোড়ল দেশগুলো বরাবরই ছিল বাংলাদেশের মতো দলের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার বিপক্ষে।
কিন্তু সেসময় বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিলেন আইসিসি'র সেসময়কার প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় গতকালই (রবিবার) পরলোকগমণ করেছেন মি. ডালমিয়া।
বাংলাদেশ দলের টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তিকালীন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্মরণ করছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য মি. ডালমিয়ার অপরিসীম ভূমিকার কথা।
মি. চৌধুরীর ভাষায়, "উনি (জগমোহন ডালমিয়া) বাংলাদেশের একজন প্রকৃত বন্ধু ছিলেন। যখন বাংলাদেশ বিশ্বপর্যায়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখছিল, তখন যে কটি ব্যক্তি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তার মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম"।
"টেস্ট মর্যাদার জন্য যখন আমরা আবেদন করি, তখন আমাদের দুটি পূর্ণ সদস্য দেশের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। তখন আমরা তাদের কাছে যাই এবং তিনি আমাদেরকে প্রথম এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সমর্থন দেন। আগে আমরা এশিয়ার অর্থাৎ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সমর্থন পাই এবং এখানেই ওনার সেই প্রাথমিক ভূমিকা ছিল। এই ভূমিকা আমাদের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল"।
সাবের চৌধুরী বলছেন, সেসময় বাংলাদেশ যদি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সহায়তা না পেত, তাহলে পরবর্তীতে টেস্ট স্ট্যাটাসের জন্য আবেদন করে খুব একটা লাভ হত না।
২০০০ সালের নভেম্বর মাসেই ঢাকার মাঠে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট ম্যাচটি খেলে।
যদিও ভারতের বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে পরাজয় বরণ করতে হয় দলটিকে।
কিন্তু ১০ই নভেম্বর ২০০০ তারিখটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে যায়।
মি. ডালমিয়া পরবর্তী অনেক ভারতীয় ক্রিকেট মোড়লই অবশ্য বাংলাদেশ দলকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেয়ার সমালোচনা করেছেন।
কিন্তু তাতে বাংলাদেশ ক্রিকেটে জগমোহন ডালমিয়ার যে অবদান তা এতটুকু ভুলে যাওয়ার কোনও অবকাশ কখনো তৈরি হয়নি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন